1. admin@sylhetbela24.com : admin :
June 21, 2025, 8:14 pm
বিজ্ঞপ্তিঃ
সিলেট বেলা ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম! আপনার আশে পাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ আমাদেরকে জানাতে sylhetbela247@gmail.com এ পাঠিয়ে দিন। আমরা যাচাই বাছাই শেষে তা যথারীতি প্রকাশ করবো। আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল?

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, মে ২১, ২০২৫
  • 43 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইসরায়েলের গোপন প্রস্তুতি সম্পর্কে নতুন তথ্য পেয়েছে, যা ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর সম্ভাব্য হামলার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সিএনএনকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা এই খবর জানিয়েছে। যারা এসব তথ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। একই সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতার চেষ্টায়ও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, এমন হামলা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কৌশলের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধ সৃষ্টি করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরো বড় আকারের সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি করবে—যা গাজা যুদ্ধের পর ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে চলতে চাইছে।

তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেনি যে, ইসরায়েল এই হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না। মার্কিন প্রশাসনের ভেতরেও এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, গত কয়েক মাসে ইরানে হামলার সম্ভাবনা ‘গুরুতরভাবে বেড়েছে’ বলে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রস্তুতি ও মার্কিন পর্যবেক্ষণ
মার্কিন গোয়েন্দারা ইসরায়েলি সামরিক কার্যকলাপ, অস্ত্র সরানো এবং বিমান মহড়ার মতো কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করেছে, যা আসন্ন হামলার ইঙ্গিত হতে পারে। তবে একই প্রস্তুতি ইরানকে চাপ দেওয়ার কৌশলও হতে পারে—যাতে তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচির কিছু অংশ পরিত্যাগ করে।

এক মার্কিন সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি মনে করে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের ‘দুর্বল সমঝোতা’ হচ্ছে, তবে চুক্তি ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল স্বতঃস্ফূর্ত হামলা চালাতে পারে।

এরই মধ্যে ট্রাম্প একটি চিঠিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে জানিয়েছেন, কূটনৈতিক উদ্যোগের সফলতার জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা রয়েছে।
এখন সেই সময়সীমা পার হয়ে গেছে। মার্কিন এক কূটনীতিক জানান, ট্রাম্প বলেছেন কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হলে সামরিক পথই পরবর্তী বিকল্প।

ইসরায়েল চাপের মুখে, ইরান দুর্বলতম অবস্থানে
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দুই দিক থেকে চাপে আছেন—একদিকে তিনি চান না যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো চুক্তি করুক যা ইসরায়েলের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়, অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কও ভেঙে যেতে দিতে চান না।

এদিকে ইরান বর্তমানে সামরিক দিক থেকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। অক্টোবরের ইসরায়েলি হামলায় তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও আঞ্চলিক প্রভাব হারানোর ধাক্কা।

মার্কিন সহায়তা ছাড়া ইরানে হামলা সম্ভব?
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা সম্ভব নয়—বিশেষত গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রে, যেখানে বোমা ফেলার জন্য প্রয়োজন বিশেষ প্রযুক্তি ও মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার সক্ষমতা।

তবে ইসরায়েলি এক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের সঙ্গে এমন কোনো ‘খারাপ চুক্তি’ করে যা ইসরায়েল মেনে নিতে পারে না, তবে ইসরায়েল এককভাবেও সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে জট
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান যেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা বন্ধ করে, কারণ এটি অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে। তবে ইরান বলছে, বেসামরিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা তাদের অধিকার, যা তারা জাতিসংঘের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির আওতায় পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘আমরা এমন কোনো চুক্তি মেনে নেব না, যেখানে ১ শতাংশও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সুযোগ থাকে।’ তবে তিনি আরো জানান, তারা এমন একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা ইরানকে অসম্মান না করেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে।

খামেনেই মঙ্গলবার বলেন, ‘আমি মনে করি না যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা কোনও ফলপ্রসূ হবে’। তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘বড় ভুল’ বলে আখ্যা দেন। এ সপ্তাহেই ইউরোপে আরেক দফা আলোচনা হতে পারে। তবে সূত্র বলছে, এখনো কোনো চুক্তিতে ট্রাম্পের চূড়ান্ত সম্মতি নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ফেব্রুয়ারির মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল এ বছর ইরানের মূল পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে। তবে সেই হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সাময়িকভাবে বিলম্বিত করলেও সম্পূর্ণভাবে থামাতে পারবে না—এটাই বাস্তবতা।

প্রবীণ গোয়েন্দা বিশ্লেষক জনাথন প্যানিকফ বলেন, ‘নেতানিয়াহুর জন্য এটি একটি সত্যিকারের কূটনৈতিক ও কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।’

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2024 Sylhetbela24.com
Theme Customized By BreakingNews