নীরব চাকলাদার :
সিলেটে বাড়ছে চোরাচালান। চোরাচালানের সাথে জড়িত রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বিশেষ করে আসন্ন
ঈদকে সামনে রেখে দিনে-রাতে ভারত থেকে আসছে বিভিন্ন প্রকারের পণ্য। আর চোরাচালানে সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তের অন্তত ১৮ টি রোডকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে চোরাচালানী চক্র। ফলে প্রতিদিনই শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চোরাই পথে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আসছে কাপড়, কসমেটিকসহ বিভিন্ন প্রকারের পণ্য। এসব চোরাকারবার ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বিজিবি, তবুও থামছে না চোরাচালান।
জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলায় ভারতের সাথে সীমান্ত রয়েছে প্রায় ১২০ কিলোমিটার। জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুরসহ সীমান্তবর্তী উপজেলাসমূহের বিভিন্ন দুর্গম গোপন পথ। অপরদিকে ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গে সিলেট জকিগঞ্জ উপজেলার মূল সংযোগ রয়েছে। সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, বিয়ানীবাজার, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে।
ফলে দুই জেলার সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়ে সড়ক ও নদী পথ দিয়ে এই পণ্য অন্যত্র পাচার করছে চোরাকারবারি চক্র। এতোদিন চিনি, মসলা, কসমেটিকস জাতীয় পণ্য চোরাইপথে নিয়ে আসলেও ঈদকে সামনে রেখে পণ্যে ধরণ পাল্টিয়েছে চোরাকারবারিরা। সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে ভারতীয় শাড়ি, থ্রি পিস, শার্ট, প্যান্টের পিস ও থান-কাপড় বাংলাদেশে নিয়ে আসছে চক্রের সদস্যরা। সুযোগ বুঝে সুকৌশলে এই চোরাই পণ্য ছড়িয়ে দেয় বাজারে।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার পরিস্থিতিতে কিছুদিন চোরাকারবার কম হলেও সম্প্রতি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্তে বেড়েছে চোরাকারবারিদের তৎপরতা। ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে পড়েছে একাধিক চক্র। রাতের আঁধারে বিজিবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসছে কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য। তবে আগের চেয়ে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি’র তৎপরতার বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রতারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ঈদকে সামনে রেখে চোরাকারবারিদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। রাত হলে সীমান্ত এলাকায় বেড়ে যায় তাদের কার্যকলাপ। ইদানিংকালে ভারতীয় কাপড় বেশি আনা হচ্ছে। যা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে সীমান্তে বিজিবি’র কারণে অনেক সময় চোরাইপণ্য আনতে ব্যর্থ হয় চোরাকারবারিরা।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ডলুরা এলাকার দিলু মিয়া বলেন, এতোদিন বর্ডার বন্ধ ছিল। কিন্তু ঈদের হাটকে সামনে রেখে আবারও বিভিন্ন মাল নামাচ্ছে চোরাকারবারিরা। প্রায়দিনই বিজিবি’র হাতে ধরা পড়ছে এসব মালামাল।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি’র অধিনায়ক একে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ঈদকে সামনে রেখে চোরাকারবারিরা কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য ভারত থেকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তাই চোরাকারবার রোধে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। চোরাকারবার প্রতিরোধে সীমান্তে আমাদের সদস্যরা রাত-দিন কাজ করছেন।