কিউবায় কোনো ভিক্ষুক নেই’—এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন দেশটির শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতো। কিউবার কমিউনিস্ট শাসিত দ্বীপে দিন দিন বাড়তে থাকা দারিদ্র্য ও খাদ্য সংকটের বাস্তবতাকে অস্বীকার করে দেওয়া এই মন্তব্য দেশ-বিদেশে কিউবানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদের এক অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে ফেইতো বলেন, ‘কিউবায় ভিক্ষুক বলে কিছু নেই। কেউ কেউ ভিক্ষুক সেজে সহজে টাকা কামানোর চেষ্টা করছে।
’ তিনি আরো বলেন, যারা রাস্তায় ময়লার স্তূপ থেকে কিছু খুঁজে বেড়ায়, তারা আসলে অবৈধভাবে রিসাইক্লিংয়ে জড়িত।’ এই বক্তব্যের পরপরই কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াস-ক্যানেল শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতোর বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন, যদিও তিনি সরাসরি মন্ত্রীর নাম নেননি।
তিনি বলেন, ‘জনগণের বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো নেতা সহানুভূতিহীন আচরণ করতে পারে না।’ কিউবার শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতোর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশি-বিদেশি অনেক কিউবান নাগরিক, অধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরা তার অপসারণ দাবি করে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, ‘এই মন্তব্য কিউবান জনগণের জন্য এক চরম অবমাননা।’
বিশিষ্ট কিউবান অর্থনীতিবিদ পেদ্রো মনরিয়াল সামাজিক মাধ্যমে এক ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যে লেখেন, ‘কিউবায় এখন ‘মন্ত্রীবেশী মানুষ’ দেখা যাচ্ছে।’ দ্রুতই ফেইতো পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং তা কিউবার কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকারের পক্ষ থেকে গৃহীত হয়। যদিও কিউবা সরকার দেশে ঠিক কত মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত তার কোনো সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না, তবে চলমান গভীর অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্যঘাটতির কারণে রাস্তায় দারিদ্র্যের প্রকট চিত্র দেশটির সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট।
কিউবার শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফেইতোর মন্তব্য এবং পরবর্তী পদত্যাগ কিউবায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে জনগণের বাস্তবতার বিভেদের একটি প্রকাশ্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।