1. admin@sylhetbela24.com : admin :
July 8, 2025, 10:46 am
বিজ্ঞপ্তিঃ
সিলেট বেলা ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম! আপনার আশে পাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ আমাদেরকে জানাতে sylhetbela247@gmail.com এ পাঠিয়ে দিন। আমরা যাচাই বাছাই শেষে তা যথারীতি প্রকাশ করবো। আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

কুলাউড়ায় চা শ্রমিকদের সরকারি অনুদানে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাত

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
  • 26 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইউনি চা-বাগানের শ্রমিকদের সরকারি অনুদান পাওয়ার জন্য উপকারভোগী তালিকা তৈরিতে নানা অনিয়ম করা হয়েছে। এছাড়াও এই অনিয়মের মাধ্যমে বিগত প্রায় ১৫ বছর থেকে অর্থ আত্মসাত করে আসছেন বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি অজিত কৈরি। বিষয়টি নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বঞ্চিত চা-শ্রমিকরা।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানের পাঁচ হাজার শ্রমিক নারী-পুরুষকে এককালীন ছয় হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। এর মধ্যে লুয়াইউনি বাগানের ১৮৭ জন শ্রমিক অনুদান পান। প্রত্যেক শ্রমিকের বিকাশ নম্বরে সরাসরি এ অনুদান দেওয়া হয়। বাগানে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন এই তালিকায়।

অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী শ্রমিকদের নাম উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে আগেই সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি, বাগানের ব্যবস্থাপক ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়।

লুয়াইউনি বাগানের শ্রমিকরা জানান, উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ খবর পেয়ে বাগানের কয়েকজন শ্রমিক বিষয়টি সত্যতা যাচাই করতে নামেন। তাঁরা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও তালিকা তৈরিতে স্থানীয়ভাবে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে উপকারভোগীদের তালিকা সংগ্রহ করেন। এরপর উপকারভোগীদের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও মোবাইল নম্বর যাচাই-বাছাই করেন। এতে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে।

অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত রবি ভূমিজ, অনন্ত ভূমিজ, দিলীপ পাশী, রাজিব নুনিয়া, হৃদয় দাশ জানান, আর্থিক অনুদান স্থায়ী শ্রমিকদের পাওয়ার কথা। কিন্তু উপকারভোগী তালিকায় ১৮৩ নম্বর ক্রমিকে শ্রমিক হাছিনা আক্তারের নাম উল্লেখ করা হয়। অথচ তিনি বাগানের বাসিন্দা বা শ্রমিক নন। তালিকায় চা শ্রমিকদের পাশাপাশি ভিন্ন পেশার লোকজনের নামও রয়েছে। উপকারভোগীদের নামের বিপরীতে অন্য ব্যক্তিদের মুঠোফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে।

হৃদয় দাস অভিযোগ করেন, তাকে অনুদান দেওয়ার কথা বলে এআইডি কপি, ২০০টাকা ও তার মোবাইল নাম্বার ০১৩৩৪৭০৬১৪০ নেওয়া হয়। কিন্তু শুধু বিকাশ নাম্বার পরিবর্তণ করে বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি ০১৭১০২৩৪২৭৪ বিকাশ নাম্বারে ২০২৪-২৫ সালের অনুদানের ১১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। বিকাশ নম্বরটি সভাপতি অজিত কৈরির মেয়ে পূজা কৈরির।

রাজিব নুনিয়া অভিযোগ করেন, একই কায়দায় তাকে অনুদান দেওয়ার কথা বলে এনআইডির সাথে ২০০টাকা এবং মোবাইল নাম্বার ০১৭৬৮৩১০৭৮৫ নেওয়া হয়। কিন্তু অনুদানের টাকা ০১৭৯৩৬২৭৫৫৩ বিকাশ নাম্বারে ১১ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। বিকাশ নাম্বারটি অজিত কৈরির ভাইয়ের ছেলে সজল কৈরির। সজল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

তারা জানান, ১২১ ক্রমিক নম্বরে শ্রমিক লক্ষ্মী মুনিয়ার বিকাশ নাম্বারটি সভাপতি অজিত কৈরির প্রথম স্ত্রী সাবিত্রী কৈরির। ৬০ ক্রমিক নম্বরে বাগানের মুদিদোকানদার বিদ্যাসাগর গোয়ালার নাম রয়েছে। তাঁর এক ছেলে ফ্রান্স প্রবাসী। ১৪১ নম্বরে অজিত কৈরির স্ত্রী রুমি রবিদাসের নাম রয়েছে। রুমি বাগানের শ্রমিক নন। ১৬২ নম্বরে পঞ্চায়েত সভাপতি অজিত কৈরির নাম দেওয়া হয়। ৬২ নম্বরে বাগানের টিলাবাবু রীনা সিং রাউতিয়ার নাম রয়েছে। ১২৫ নম্বরে স্থানীয় হলিছড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব ভরের স্ত্রী শিউলি রানী ভরের নাম দেওয়া হয়। শিউলিও বাগানের শ্রমিক নন।

তালিকায় শ্রমিকের বাইরের লোকজন, নিজের ও স্ত্রীর নাম থাকা প্রসঙ্গে লুয়াইউনি বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি অজিত কৈরি জানান, ‘তালিকা তৈরি করতে গিয়ে পরিশ্রম, টাকাপয়সা খরচ হয়েছে। তাই তিনি দুটি নাম (নিজের ও স্ত্রীর) নিয়েছেন। অনেক শ্রমিকের নাম তালিকায় আছে। তারা টাকাও পেয়েছেন। কেউ কেউ শ্রমিক না হলেও বাগানেরই লোক।

অজিত কৈরি আরও বলেন, ইমরান নামের স্থানীয় এক যুবক তালিকা তৈরিতে সহযোগিতা করেন। তাই তালিকায় কিছু ভুল হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে কিছু লোক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রাণেশ বর্মা জানান, বিভিন্ন বাগান থেকে তালিকা পাওয়ার পর তালিকায় দেওয়া কিছু নম্বরে ফোন করে যাচাই-বাছাই করেন। লুয়াইউনি বাগানে এ সমস্যা ছিলো না।

এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহিউদ্দিন জানান, শ্রমিকদের অভিযোগ দু’দিন শুনানি হয়েছে। আরও কিছু তথ্য প্রমাণ নিয়ে আসার জন্য অভিযোগকারীরা দু’দিনের সময় নিয়েছেন। অভিযোগ প্রমানিত জলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2024 Sylhetbela24.com
Theme Customized By BreakingNews