সিলেট জেলায় চলতি বছরে কোরবানীর পশুর হাট বেড়েছে ৩২ টি। গেলবছর জেলায় ৪২ টি পশুর হাট থাকলেও এবার বেড়ে হাটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছেন ৭৪ টি। এর মধ্যে জেলা, উপজেলা ও মহানগর মিলে প্রায় ৬২ টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন হয়ে গেছে। আরও রয়েছে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায়। এর মধ্যে সিলেট সদর ও মহানগর এলাকার জন্য ২২ টি হাট অনুমোদন করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষেই হাটগুলো বসার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এবার জমজমাট হবে সিলেটের পশুর হাট। এর ফলে উপকৃত হবেন ক্রেতারাও। নিজের পছন্দের পশু কম দামে কেনার একটি সুযোগ থাকবে বলে ধারণা করছেন ক্রেতারা। তাছাড়া এবার চাহিদার বিপরীতে পশুর সংখ্যাও বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর।
প্রাণিসম্পদ বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের চার জেলার বিভিন্ন খামারে কোরবানির জন্য ৩ লাখ ৯ হাজার গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৬টি ষাঁড়, ৩২ হাজার ৩৬৮টি বলদ, ৩৭ হাজার ৩৯২টি গাভী, ৫ হাজার ৪২০টি মহিষ, ৭৭ হাজার ৬৪৬টি ছাগল, ২৪ হাজার ১৪টি ভেড়া ও ৯১৯টি অন্যান্য পশু রয়েছে।
এদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবার সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ৬২টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীর ১২টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান। তিনি জানান, অনুমোদন পেলেই ইজারা কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াত জানান, সদর উপজেলায় আরও ১০টি অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের হাটগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এসব হাটের অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক সুবর্ণা সরকার জানান, জেলার ৬২টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। মহানগর এলাকার ১২টি হাটের আবেদনের বিষয় যাচাই-বাছাই চলছে। এরপর জেলা প্রশাসক অনুমোদন দেবেন ‘
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলায় এবার ৬২টি ও নগরীতে ১২টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। মে মাসের শেষভাগ বা জুনের শুরুতে এসব হাট চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটি কর্পোরেশনের ১২টি স্থান হলো: দক্ষিণ সুরমা প্যারাইরচক ট্রাক টার্মিনাল, দক্ষিণ সুরমাস্থ সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন এস ফল্ট মাঠ , পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকা, মাছিমপুর কয়েদীর মাঠ, ঝালোপাড়া ভার্থখলা, শাহপরান গেট এলাকা, টিলাগড় পয়েন্ট, মেজরটিলা বাজার তেমুখী, আখালিয়া নবাবী জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, পাঠানটুলা পয়েন্ট ও মিরাপাড়া আবদুল লতিফ স্কুল সংলগ্ন মাঠ।এছাড়া পুরো জেলায় আরও ৬২টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সিলেটে এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে তিন লাখের বেশি। আর চাহিদা রয়েছে পৌনে তিন লাখের মতো। ফলে চাহিদার চেয়ে কোরবানিযোগ্য পশু এবার বেশি রয়েছে। সিলেট প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা এমন তথ্য দিয়েছেন।
সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের পরিচালক ডা. মারুফ হাসান জানান, প্রাথমিক হিসাবে সিলেট বিভাগে কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ২ লাখ ৭১ হাজার ৫০০। এবার চাহিদা কিছু কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বিপরীতে খামারিদের কাছে মজুদ আছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৫১৫টি পশু। ফলে এবার কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।