মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। এ রায়ের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে মধুর ক্যান্টিনের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিলে ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এসময় তারা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিলটি শাহবাগ মোড়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। শাহবাগ মোড়ে পুলিশ বাধা দিলেও তারা বাধা অমান্য করে মিছিল চালিয়ে যান।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় এটিএম আজহারুল আল-বদর বাহিনীর একজন কমান্ডার ছিলেন বলে জানা যায়। আজ তাকে খালাসের রায় দিয়েছে আদালত। এখন বলা হচ্ছে যে, তিনি বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করেছিলেন।’
‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এ ধরণের বর্ণনায় ইতিহাস পুনর্লিখনের চেষ্টার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিন্দা জানাই,’ বলেন তিনি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করে শিমুল আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি কীভাবে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক পক্ষ জামায়াত, শিবির ও তাদের মতো গোষ্ঠীগুলো হঠাৎ করে রাজনৈতিক মঞ্চে আবার আবির্ভূত হয়েছে। এমনকি তারা নিজেদের জুলাইয়ের বিদ্রোহের মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করছে।’
‘যদি অন্তর্বর্তী সরকার এভাবেই রাজাকার ও আল-বদর সদস্যদের কারাগার থেকে মুক্তি দিতে থাকে এবং তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেয়, তাহলে তাদেরও ফ্যাসিবাদী পতিত হাসিনা সরকারের মতো একই পরিণতি ভোগ করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল সমাবেশে বলেন,’ আমরা দেখেছি যে তিনটি পৃথক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে এখন সবগুলো মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ দেশের মানুষ ১৯৭১ সালের কথা কখনো ভুলবে না। যে সরকার ৭১ সালের গণহত্যাকারীদের পক্ষ নেবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
মিছিলে বাধা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ‘মিছিলে পুলিশের বাধার বিষয়ে আমি জানি না এবং এমন কোনো আদেশও ছিল না।’