তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:
সুনামগঞ্জ জেলার সর্ববৃহৎ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত রামসার দ্বিতীয় সাইট টাংগুয়ার হাওরের নজর খালির ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে নিচু অঞ্চলের জমির ফসল হানি হয়েছে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুযায়ী,শনিবার (২৬ এপ্রিল) গভীর রাতে প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব, আর পাটলাই নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি, দুইয়ের চাপে বাঁধটি ভেঙে পড়ে। হঠাৎ করে হাওরের ভেতরে পানি প্রবেশ করায় চাষাবাদকৃত হাজার হাজার একর জমির পাকাঁ ফসল অধিকাংশ ধান কর্তনের ফলে স্বল্প সংখ্যক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত।
টাংগুয়ার হাওর শুধু একটি কৃষিভিত্তিক এলাকা নয়; এটি আন্তর্জাতিকভাবে রামসার দ্বিতীয় সাইট হিসেবে স্বীকৃত একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল। এখানে মা- মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণীর অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এর সংরক্ষিত তীরবর্তী জমিতে প্রতিবছর (প্রায়) ১০হাজার একর জমিতে বোরো ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন হাজারো স্থানীয় কৃষক।
স্থানীয় কৃষক রুবেল মিয়া জানান, হাওরে এক আনা ফসল বাকি আছে, বাকি সবটুকু জমির ধান কেটে গোলায় ওঠেছে। যতটুকু আছে,এসব জমি হাওরের নিচু স্থানে রোপণ করা হয়েছে। যাদের জমি তলিয়ে গেছে, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওদের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক খসরুল আলম জানান, এই হাওরে ৮২ টি গ্রামের কৃষক ১০হাজার একর জমি চাষাবাদ করেন। এটি সংরক্ষিত এলাকা,এর জন্য স্থানীয় কৃষকরা নিজস্ব অর্থায়নেই ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেন।
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুরাদ মিয়া বলেন, গতকাল রাতে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় বাঁধটি ভেঙে গেছে শুনলাম।তবে তথ্য মতে জানলাম, টাংগুয়ার হাওরের পাকাঁধান ১৫আনা ফসল কর্তন শেষ হয়েছে। বাকি ১আনা ফসল ক্ষতি গ্রস্ত হবে,ধারণা করছি । এই বাঁধটি সংরক্ষিত এলাকার। স্থানীয় কৃষকদের নিজস্ব অর্থায়নে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আমার পরিষদের পক্ষে থেকে এর পাশের হাওর গলগলিয়ার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম এর অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন করলেও, ফোন রিসিভ না হওয়ায়, উনার মন্তব্য জানা যায়নি।