দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি :
একে একে ৮ জন শিশুকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত জামায়াত নেতার নাম ডাঃ কাজিমুদ্দিন। ঘটনাটি ঘটে সুনামগঞ্জ জেলাধীন দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার বরইউড়ি আলিম মাদ্রাসায়। প্রতিষ্ঠানটি জামায়াতের ইত্তেহাদুল কোররা পরিচালিত কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। অভিযুক্ত জামায়াত নেতা ওই মাদরাসা শাখার প্রধান ক্বারি হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মাদরাসায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন সময়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে।
বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।এ সময় মাদ্রাসা ঘেরাও করে মিছিল করেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাঁরা ধর্ষক কাজিমুদ্দিনের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়ে কাজিম উদ্দিনের বেয়াই উপজেলা জামায়াতের আমির, ডা. হারুন রশিদ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।তিনি ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে মাদ্রাসায় বৈঠক করেন। এ সময় তিনি কৌশলে অভিযুক্ত কাজিম উদ্দিনকে কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার ঘোষণা দিয়ে বিক্ষুব্ধদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
ডা. হারুন রশীদের এই ঘোষণার পর এলাকাবাসী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মাদরাসার সামনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় কাজীমুদ্দিনের পক্ষ নিয়ে একটি অংশ বিষয়টি মাদ্রাসার বসে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করলে তাতে বাঁধা প্রদান করে স্থানীয় বিক্ষুভকারী যুব সমাজ। তাদের দাবি- গোপন বৈঠক থেকে কখনোই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। দোষী সাব্যস্থ করে প্রকাশ্যে এর সুবিচার করতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, কাজিম উদ্দিনের দুই স্ত্রী রয়েছে। তাঁর প্রথম স্ত্রী মোছা. রাবেয়া আক্তারও জামাতের রুকন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন । অভিযুক্ত কাজিম উদ্দিন নিজেও জামায়াতের রুকন। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী থাকনে পার্শ্ববর্তী বাঁশতলা গ্রামে।
এদিকে জামায়াত নেতা কাজিমুদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় মাদরাসা শাখা থেকে সারাজীবনের জন্য নিষিদ্ধ এবং অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ‘ইত্তেহাদুল কোররা বাংলাদেশ’ দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের আমির পল্লী চিকিৎসক হারুনুর রশিদ। একই সাথে অভিযুক্ত কাজিমুদ্দিনকে কেন্দ্রীয়ভাবেও ‘ইত্তেহাদুল কোররা বাংলাদেশ’ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।