একটি প্রোগ্রামে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন সিলেটের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তোশিবা। প্রোগ্রামে সঙ্গীত পরিবেশনকালে তোশিবার পরনে ছিল একটি শর্ট জামা। সাথে খোলা একটি কটি। এমন পোশাকে তোশিবার তলপেট পুরোটাই দেখা যাচ্ছে। সেই সাথে পায়জামার দৃশ্যটি ছিল আরও লজ্জাজনক। তোশিবার গানের প্রোগ্রামে জামা পরিধানের এমন নগ্ন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অনেকেই প্রোগ্রামের সেই ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর সেই সব পোস্টের কমেন্ট বক্স ভরে গেছে নানা সমালোচনায়। গান গাইতে গাইতে তিনি দর্শক স্রোতাদের কাছে ঘেঁষে টাকার নোটও গ্রহণ করতে দেখা গেছে। জানা গেছে সঙ্গীতশিল্পী তোশবার এই গানের প্রোগ্রামটি ১ জুলাই টরেন্টোর টরেন্টের ডেন্টনিয়া পার্কে আয়োজিত সময়ের মেলায় অনুষ্ঠিত হয়।
পোস্টের অধিকাংশের মন্তব্য ছিল- তোশিবার সঙ্গীত প্রতিভায় মুগ্ধ ছিল পুরো সিলেট। সেই প্রতিভা সারা দেশ মাড়িয়ে বিদেশের গন্ডিতেও ছিল সমান জনপ্রিয়। বৃহত্তর সিলেটে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর দেশে-বিদেশের সম্মান সিলেটবাসীর জন্য ছিল গৌরবের। কোনরকম প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গীতশিক্ষা গ্রহণ ছাড়াও যে সুরের প্রতিভা বিকাশ হতে পারে, শিল্পী তোশিবা ছিল তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তাছাড়া, সঙ্গীত পরিবেশনকালে সিলেটের চিরাচরিত পোষাক-পরিচ্ছদ ছিল তোশিবার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ। রক্ষণশীল সিলেট অঞ্চলে অন্যান্য নারীদের মতো সঙ্গীতের মঞ্চেও তোশিবার আব্রুবেশ ধারণ প্রশংসা কুঁড়াতে থাকে।
কিন্তু আলোচিত একটি প্রোগ্রামে তোশিবার এমন পোষাকের ছবি সিলেটবাসীর মাথাকে হেট করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। তাদের দাবি-দেশে অবস্থানকালীন তোশিবা এবং বর্তমানে বিদেশের মাটিতে অবস্থান করা তোশিবার মধ্যে বিস্তর ফারাক। খ্যাতিকে পূঁজি করে তোশিবা এখন মনোরঞ্জনের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এতে করে নিজেকে সস্তা জনপ্রিয়তার স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিদেশের মাটিতে কোন এক প্রোগ্রামে নগ্ন পোষাক পরিহিত তোশিবার এই বেশ সিলেটবাসীর ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করে দিয়েছে।
তসিবা বেগম সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজারের কামারগাঁও গ্রামে জন্ম। বেড়ে উঠা সিলেটের খাদিম নগর এলাকায়। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তসিবা মেজ। ছোট বেলা থেকে গানের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল তার। সেই টান থেকে গান গাওয়া শুরু। বাবা-মা সঙ্গীত প্রিয় হওয়া তেমন কোনো বাঁধার মুখে পড়তে হয়নি তাকে। নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনের রিয়েলটি শোতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে সেই সময়ে সুযোগ হয়নি তসিবার। দীর্ঘদিন পর টিকটক ভিডিওয়ে বাজনা ছাড়া গান ও সিলেটের অঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে ভাইরাল হয়ে যান তিনি। আমেরিকা প্রবাসী মিউজিশিয়ান মুজার উদ্যোগে সিলেটের তোশিবা বেগমের গাওয়া ‘নয়া দামান’-এর নতুন ভার্সনটি সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাতে বাঁশি বাজিয়েছেন মিম হক। অনেকেই তাদের গানের সঙ্গে নেচে ভিডিওচিত্র ধারণ করে ইউটিউব-টিকটকে ছাড়ছেন। সেগুলোও দর্শকদের আকৃষ্ট করছে।
সেই তোশিবার শুরুটা ভালো ছিল না। রেডিও-টেলিভিশন তো দূরে থাক, জীবনে কোনো দিন কোনো অনুষ্ঠানেও গান করেননি। বের হয়নি কোনো অ্যালবাম। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই তার সামনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। তোশিবার নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে। ‘তোশিবা বেগম’ নামের ওই ইউটিউব চ্যানেলে তিনি নিজের গাওয়া গান আপলোড করেন। এ ছাড়া জনপ্রিয় ইউটিউবার ইমরানের চ্যানেল ‘মেড ইন বাংলাদেশের’ জন্য ৪-৫টা গান গেয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ‘দুই আনার পিরীত’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
প্রায় দুই মাস আগে দিওয়ানা নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হয় তোশবার ‘মনর গাঙ্গে ভাসাই দিছ, তোমার প্রেমর নাও’ শিরোনামের একটি গান। সেই গানেও তার পোষাক ছিল অব্রুবিহীন। সেই গানের পর পোষাক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যখন সমালোচনা ভরপুর ছিল, ঠিক তখনই তোশিবার আরেকটি গান নিয়ে এমন নগ্ন পোষাক সিলেটবাসীর মনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই শিল্পীকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্য থেকে এমরান চৌধুরী
সিলেট-৪ আসনের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই
অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। ছাত্র রাজনীতির উত্থাল সময়টাতে জাতীয়তবাদী রাজনীতিতে যার হাতে কড়ি। শিক্ষার সাথে রাজনীতির দীক্ষা। এই দুইয়ের সমন্বয় গঠিয়ে মেধা আর শ্রমে দ্রুত দৃষ্টিতে আসেন সকলের। রাজনৈতিক প্রতিভা আর সাংগঠনিক বিচক্ষণতার পুরস্কার হিসেবে সভাপতি নির্বাচিত হন সিলেট জেলা ছাত্রদলের। তারপর আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয় নি। দল ও বলকে পূঁজি করে গোটা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে সংগঠিত করেন আপন প্রজ্ঞায়। একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতার প্রতিফলন গঠতে থাকায় এমরান আহমদ স্থান করে নেন অভিভাবক সংগঠন জাতীয়তাবাদী দলে। বর্তমানে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদকের। তিলে তিলে গড়ে উঠা এমরান চৌধুরী জুলাই আন্দোলনে ছিলেন সিলেটে সম্মুখ সারীর একজন যোদ্ধা। ফলে দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ-পরিক্রমায় এবার তিনি প্রার্থী হতে চাচ্ছেন সিলেট-৪ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসন থেকে। এমরান চৌধুরীর পক্ষে দীর্ঘদিন থেকে এমন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দলীয় অনুরাগী সমর্থক ও শুভাকাঙ্খিরা।
সিলেটের ১৯ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সিলেট-৪ আসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে প্রচুর সমস্যা থাকলেও উন্নয়নের উপযোগীতাও রয়েছে ব্যাপক। তবুও বারবার বঞ্চিত ছিল প্রবাসী অধ্যুষিত এই জনপদ। সিলেট-৪ আসনের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন আর সম্ভাবনার ষোলকলা পূরণ করতে প্রয়োজন একজন কর্মমুখী,দলবান্ধব এবং সুযোগ্য কর্মবীরের। সেই তালিকায় সকলের পছন্দের শীর্ষে নাম উঠে আসছে অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর। একটি প্রগতিশীল এবং শিক্ষিত জনপদ হিসেবে পরিচিত এই জনপদ স্বাধীনতার পর থেকে ছোঁয়া পায় নি কাঙ্খিত উন্নয়নের। রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, পানি ও বিদ্যুৎ সেবার চরম অব্যবস্থাপনা এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের। গেল ১৭ বছর ধরে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারবাসী উন্নয়নের নামে প্রতারণা দেখেছে। বরাদ্দ এসেছে, কিন্তু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি।
গোলাপগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আলীম বলেন, নির্বাচন আসলেই আমাদের নানা প্রতিশ্রুতি শোনানো হয়। এ রকম শোনতে শোনতে গেল ১৭ বছরে হতাশার বুকে কেউ আলো জ্বালাতে পারে নি। আমরা এবার হতাশা কিংবা প্রতিশ্রুতি শোনতে নয়, চাই আমাদের স্বপ্নের কাঙ্খিত বাস্তবায়ন। তিনি বলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও এই আসনে বিএনপি থেকে আরও অনেকেই দলীয় মনোনয়ন চাইছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো- তাদেরকে দুর্যোগ-দুর্বিপাক এবং দু:সময়ে আমরা কাছে পাইনি। সে হিসেবে যিনি তৃণমূল মানুষের ভাষা বোঝেন, মেশার চেষ্টা করেন, যোগাযোগ রাখেন সারাক্ষণ-তিনি অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, একজন সম্ভাবনাময়ী কল্যাণধারার রাজনীতি হিসেবে নি:সন্দেহে তিনি অগ্রগন্য। তাই আমরা আশা করছি-দলীয় হাই কমান্ড জুলাই অভ্যুত্থানসহ এমরান চৌধুরীর বিগত কার্যক্রম বিবেচনায় রেখে সিলেট-৪ আসনের মানুষের উন্নয়নের জন্য এই নেতাকে মনোনয়র প্রদান করে জনগণের পাশে থাকবেন।
জানাগেছে বর্তমানে এমরান আহমদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। আগামী সোমবার (৭ জুলাই) তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার জাতীয়তাবাদী পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন।
সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কোষাধ্যক্ষ জনাব জহির হোসেন বলেন,গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজাকে উন্নত করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন একটি শিক্ষিত এবং স্মার্ট জনগোষ্ঠী। যারা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়ে একটি পরিচ্ছন্ন সমাজের অবয়ব তৈরি করতে সমর্থ হয়। আর সেটি করতে হলে-সর্বগ্রে জোড় দিতে হবে শিক্ষা ক্ষেত্রে। ফলে একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে এই অঞ্চলকে আলোকিত করতে হলে প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন। সেই উন্নয়ন যথাযথভাবে করা সম্ভব হলে মানুষ ফিরে পাবে বাসযোগ্য একটি অনুকুল পরিবেশ। আর এই সবকিছুর জন্য এমরান চৌধুরীর কোন বিকল্প এই আসনে এখনো চোখে পাড়ে নি।
এদিকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত এমরান চৌধুরীর ওয়াটসআপ নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি ‘প্রথম সিলেট’ কে জানান-‘দলের জন্য কাজ করাটাই আমার প্রথম কাজ। সেই কাজের স্বীকৃতি ভালো হলে দলই তখন মূল্যায়ন করবে। নির্বাচন করার বিষয়টি নির্ভূর করে দলীয় মনোনয়নের উপর। আমি দলের লোক বিধায় দলের প্রতিই অনুগত এবং দলীয় সিদ্বান্তের উপরই নির্ভর করতে চাই। তিনি বলেন, আমি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা অবস্থায়ও সিলেট-৪ আসনের লোকজন আমাকে প্রার্থী হতে উৎসাহিত করছেন। একই অবস্থা স্বদেশের মাটিতেও। প্রতিদিনই সিলেট-৪ আসনের লোকজন আমাকে ফোন করে সেই তাগিদ দিচ্ছেন। আমি তাদের সেই উৎসাহ-উদ্দীপনাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। আমি প্রার্থী হতে না পারলেও তাদের সুখে-দু:খে পাশে থেকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।
এমরান চৌধুরী বলেন. বিগত শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাক্ষেত্রকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিয়েছে। সুতরাং আগামীর রুচিশীল প্রজন্ম গড়ে তোলতে চাইলে নৈতিকতা ও শিক্ষার গুণগত মানের পরিবর্তন করতে হবে। মিথ্যাচারের কল্পকাহীনি থেকে সত্যনির্ভর জ্ঞানচর্চায় তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হবে। স্বাস্থ্যখাতের বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় জনবল ও ওষুধের অভাব রয়েছে। এই বিষয়টি প্রাধ্যান্য দিয়ে সকলের স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, দল থেকে মনোনয়ন পরবর্তী নির্বাচিত হলে, যোগাযোগব্যবস্থার বেহাল দশা পরিবর্তনে ব্যাপক অবকাঠামোগত সংস্কার ও নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন গেল ১৭ বছরে সিলেটে আমরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আন্দোলন চালিয়ে গেছি। হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাবরণ করেছেন, অনেকেই শহীদ হয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমার পাহাড় তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তবুও আমাদের মনোবল ভাঙেনি। এই ত্যাগই প্রমাণ করে, বিএনপি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রণী শক্তি। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের রায়েই অচিরেই এই স্বৈরাচার সরকারের পতন হবে।
নিজ আসন সম্পর্কে এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ দীর্ঘদিন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। আমি আপনাদের সন্তান, আপনাদেরই একজন প্রতিনিধি হয়ে আপনাদের সেবা করতে চাই। সেই সুযোগ যদি আমি পাই,তাহলে আমি আমার সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে আপনাদের উন্নয়ন ও অধিকার নিশ্চিত করবো।