পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে প্রাণঘাতী ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরেজিক ফিভার (সিসিএইচএফ) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন করাচির বাসিন্দা। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় গণমাধ্যম জিও নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সবশেষ প্রাণহানি ঘটেছে ২৮ বছর বয়সী এক কসাইয়ের। তিনি জিন্নাহ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সেন্টার (জেপিএমসি)-তে ভর্তি হয়েছিলেন জ্বর ও তীব্র পেট ব্যথা নিয়ে। দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ল্যাব পরীক্ষায় তার দেহে কঙ্গো ভাইরাস শনাক্ত হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
সিন্ধু স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করাচির মালির এলাকা থেকে পাঁচজন এবং ঠাট্টা জেলা থেকে একজন মারা গেছেন। জুন মাসে দুইজন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে একজন করে প্রাণ হারান। এর আগে করাচির ২৬ বছর বয়সী যুবক এবং মালিরের ৪২ বছর বয়সী ব্যক্তিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
সংক্রমণের উৎস:
চিকিৎসকদের মতে, সর্বশেষ মৃত ব্যক্তি কসাই হওয়ায় আক্রান্ত পশুর রক্ত বা টিস্যুর সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সাধারণত এই ভাইরাস ছড়ায় টিক পোকার কামড় অথবা সংক্রমিত পশুর শরীরের তরল পদার্থের সংস্পর্শে এলে, বিশেষ করে জবাইয়ের সময়।
প্রতিরোধে করণীয়: বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, কঙ্গো ভাইরাসের এখনো কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। যারা পশু জবাই, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ বা পশু পরিচর্যার সঙ্গে যুক্ত, তাদের দস্তানা, মাস্ক এবং প্রতিরক্ষামূলক পোশাক ব্যবহার করা জরুরি।
ঝুঁকিতে যারা:
প্রাণঘাতি কঙ্গো ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে যারা রয়েছেন তারা হলেন- কসাই ও পশু ব্যবসায়ী, গবাদিপশু খামারের কর্মী, পশু জবাই বা পরিচর্যায় যুক্ত ব্যক্তি, স্বাস্থ্যকর্মী, যারা আক্রান্ত রোগীর রক্ত বা শরীরের তরল পদার্থের সংস্পর্শে আসতে পারেন তারা।
চিকিৎসকরা জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং জ্বর, শরীর ব্যথা বা রক্তক্ষরণের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।