ফ্যাসিস্টদের দাপটে দিশেহারা ওসমানীতে নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং কর্মচারীরা। ৬ মাসের নিয়োগ শর্তের বিপরীতে কোম্পানী জনপ্রতি লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের। কারো কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছেনা, আবার কেউ কেউ কাজ করলেও কাগজপত্রে তাদের নেওয়া হচ্ছে না স্বাক্ষর। ফলে কোম্পানী নতুন নতুন অজুহাত সৃষ্টি করে বেতন ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গেল সরকারের আমলেও একইভাবে এই দুষ্টচক্র ওসমানী হাসপাতালকে নিজেদের দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিল। একই কায়দায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও থেমে নেই চক্রটি। নতুন রূপে এই চক্রের প্রতারণার শিকার কয়েকশো আউটসোর্সিং কর্মচারী।
সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে আউটসোর্সিং কাজে জনবল সংগ্রহের জন্য মনোনীত হয়
‘সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি টাকার বিনিময়ে দরপত্র চূড়ান্ত হয় ওই কোম্পানীর নামে। দায়িত্ব নিয়েই পুরনো কৌশলে শুরু হয় তাদের নিয়োগ বাণিজ্য। আর এই বাণিজ্যের মূল হোতা বিতর্কিত রুবেল আহমদ, সামছু আহমদ ও জসীম উদ্দিন।
সূত্র জানিয়েছে, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১০টি পদে ২৬২ জন লোক নিয়োগ করা হবে। জনবল নিয়োগের টেন্ডারটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছে সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস।তাদের নামেই এই দরপত্রটি ইস্যু হয়েছে ও তাদের নামেই লাইসেন্স এবং টাকা কিভাবে লেনদেন হচ্ছে, কে নেপথ্যে এর একটি অডিও রেকর্ড কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয় । আর নেপথ্যে রয়েছেন সিলেট মহানগর কৃষক লীগের এক নেতা।
কোম্পানীর অনুকুলে টেন্ডার অনুমোদনের পর পরই শুরু হয় তাদের নিয়োগ বাণিজ্য। শহরতলীর তেমুখী এলাকায় একটি মার্কেটে রয়েছে কোম্পানীর অফিস। অফিস থেকেই যথারীতি চালানো হয় নিয়োগ বাণিজ্য।
সিলেট জেলা হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লাল জানিয়েছেন, গালফ ও আল আরাফাহ সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া আমাদের সম্প্রদায়ের ৪০ জন লোককে হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করেন। তখন তারা সবাই সিলেট সিটি কর্পোরেশনে চাকরিতে ছিলো। কিন্তু মেডিকেলের পরিছন্নতার স্বার্থে পরিচালক আমাকে বলেন। পরে আমি এই ৪০জন লোককে সিটি থেকে চাকুরি বাদ দিয়ে হাসপাতালে নিয়োগ করি। তাদের নিয়োগের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসের রুবেল ও সামছু আমাদের লোকদের চাকরি থেকে বাতিল করে দিয়েছে। পরে আমি রুবেল ও সামছুর সাথে যোগাযোগ করি তারা আমাকে টাকা দিয়ে নিয়োগ চূড়ান্ত করার কথা বলেন।
এরপর আমি ওসমানী মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তীর সাথে যোগযোগ করি। তিনি আমাকে কোন আশ্বাস না দিয়ে বলেন আমার মেডিকেলের স্টাফদের সুযোগ দিতে পারছি না আর আপনার লোকদের কি ভাবে দিবো?
এদিকে ৩০ মার্চ কাষ্টঘরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে নেয়ার জন্য এসেছিলেন রুবেল আহমদসহ কজন।পরে হরিজন সম্প্রদায়ের তোপেরমুখে পরে তিনি কৌশলে তারা পালিয়ে যান।
বিষয়টি জানতে রুবেল আহমদের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন,তাদের সাথে আলাপ আলোচনা হয়েছে । আমি একা না, আমার পার্টনারদের সাথে আলাপ করে হরিজন সম্প্রদায়ের সভাপতিকে জানাবো ।