1. admin@sylhetbela24.com : admin :
June 23, 2025, 6:43 am
বিজ্ঞপ্তিঃ
সিলেট বেলা ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম! আপনার আশে পাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ আমাদেরকে জানাতে sylhetbela247@gmail.com এ পাঠিয়ে দিন। আমরা যাচাই বাছাই শেষে তা যথারীতি প্রকাশ করবো। আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

ভয়ঙ্কর ডেভিল কয়েস : একই অঙ্গে যার বহু রূপ

  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
  • 627 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

ফরমালিন মুক্ত শতভাগ বিশুদ্ধ ডেভিলের নাম মিসবা উল ইসলাম কয়েস। একই অঙ্গে যার রূপ বহু। আওয়ামী সরকারের আমলে তার প্রথম স্ত্রী (২য় স্ত্রী জুবিন বেগমের ভাষ্যমতে) জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদের প্রভাবে তিনি ছিলেন দুর্দণ্ড প্রতাপশালী। স্ত্রীর বদান্যতায় হয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতা। নিজের ফেসবুকে তখন আওয়ামী সরকারের বন্ধনায় ঝড় তুলতেন তিনি। ফলে আওয়ামী সরকারের আমলে ভূমি আত্মসাত, প্রতারণা, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের,জল দলিল সৃজণ করে ভূমি দখল, টিলা দখলসহ হামলা-মামলায় জুড়ি ছিল না এই কয়েসের। আর হেলেন-কয়েসের এই প্রতারণা সাম্রাজ্যের অন্যতম খুঁটির জোড় ছিল সেলিনা মোমেন। সেলিনা মোমেন সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের স্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে বিগত সময়ে হাউসিং প্রকল্পের নামে শত শত প্রবাসীর টাকা আত্মসাত করে রাতারাতি কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই হেলেন-কয়েস। প্রতারিত প্রবাসীরা টাকা বিনিয়োগ করেও নিজেদের নামে ক্রয়কৃত ভূমি দখলে যেতে পারেন নি। উপরন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের শামসনামলে হেলেন-কয়েসের একের পর এক মামলা মাথায় নিয়ে দেশে আসতে পারেন নি প্রবাসীরা।

এদিকে ৫ আগষ্টে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হেলেন আহমদ দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও বহুরূপী কয়েস পালিয়ে যান নি। বরং রাতারাতি পাল্টে ফেলেছেন নিজের রাজনৈতিক দর্শন। একসময়ে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, বঙ্গবন্ধু, ড. একে মোমেন, সেলিনা মোমেনের নামে নিজের ফেসবুকে পোস্ট থাকলেও এখন তিনি জামায়াত ও বিএনপির জয়গান গেয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ৫ আগষ্টের পর তিনি আওয়ামী লীগ শাসনামলে সকল পোস্ট ডিলিট করে দেন নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে। অবশ্য সব স্ক্রীনশট গুলো এখন ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সরকারের ডেভিল হান্ট অপারেশনে অবশেষে ডেভিল কয়েসকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১২ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ নগরীর জিন্দাবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত কয়েসের বিরুদ্ধে মারামারি, হত্যা চেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার আইনে মোট ৭টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা রয়েছে ৬টি এবং দক্ষিণ সুরমা থানায় ১টি। গ্রেফতার বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন,কয়েস আওয়ামী লীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কে এই কয়েস
মিছবাহুল ইসলাম কয়েস (৫০) এর গ্রামের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত নিমার আলীর ছেলে। এক সময়ে লেখাপড়ার খরচ যোগাতে যে কাজ করতো হোটেল বয়ের, সেই কয়েস এখন বাস করেন সিলেট এয়ারপোর্ট রোডের বড়শালা এলাকায় নিজের বাসায়। বড়শালা এলাকায় কয়েসের নামে রয়েছে আরও প্রায় ৭/৮ টি প্লট। চতুর্থ স্ত্রী নিয়ে সেখানেই স্থায়ীভাবে বাস করছেন তিনি।

রূপ পাল্টানো এক ভয়ানক ডেভিল
গেল বছরের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পতন পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর থেকেই দেশ থেকে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতারা। কয়েসের কথিত স্ত্রী হেলেন আহমদও অনুসরন করেন সেই পথ। বর্তমানে তিনি ছেলেদের সাথে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে দেশ ছাড়া হন নি মিসবাহুল ইসলাম কয়েস। বরং দেশে সকল অপকর্ম হালাল করে নিতে তিনি ভিন্ন পথ অবলম্বন করেন। এক সময় আওয়ামী লীগ বন্ধনায় বিভোর থাকলেও এখন তিনি জামায়াত-বিএনপির জয়গানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব। এবার দেখে আসি ৫ আগষ্ট পরবর্তী তিনি নিজের ফেসবুকে জামায়াত-বিএনপি নিয়ে যা যা বলেছেন–

নিজে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত কয়েস চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ‘‘সৎ দক্ষ ও ডায়নমিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবজি ও দুর্ণীতি বন্ধ করা সম্ভব নয়’- এমন একটি লেখা পোস্ট করেন। একই দিনে ‘সবাই গদিতে বসা নিয়ে ব্যস্থ’জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. শফিকুর রহমানের এই উদ্বৃতি ফেসবুকে পোস্ট করেন এমডি নাজমুল। সেটি নিজের আইডি থেকে শেয়ার করেন মিসবাহুল ইসলাম কয়েস।

৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ জামায়েত ইসলাম কর্মী সম্মেলন করে কুষ্টিয়ায়। সেই সম্মেলন লোকে লোকারন্য উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট করেন এমডি নাজমুল আহমদ। সেই পোস্ট শেয়ার করেন আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহুল কয়েস।

চলতি বছরে সিলেটের ৬ টি আসনে সম্ভার‌্য দলীয় প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম। নির্ধারিত দলীয় সেই প্রার্থীদের ছবি দিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে শুভ কামনা জানিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে একটি লেখা পোস্ট করেন কাজি নাজমুল আহমদ নামের জনৈকি ব্যক্তি। মিসবাহুল কয়েস নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে সেটি শেয়ার করেন।

চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক রহমানের উদ্বৃতি কোট করা বাংলাভিশন টিভির লগো সম্বলিত একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন।

এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি জাতীয় কমিটির সিদ্বান্তক্রমে সিসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনীত করায় গেল বছরের ৪ নভেম্বর তাকেও অভিনন্দন জানান এই ডেভিল কয়েস আহমদ।

ফেসবুকে বোমা ফাটান জাস্ট হাসান
এদিকে ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর জাষ্ট হাসান নামের ফেসবুক আইডির একটি লেখা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মন্তব্যে অংশ গ্রহণ করেন কয়েকশো মানুষ।অধিকাংশ মানুষই মিসবাউল ইসলামকে বহুরূপী আখ্যা দিয়ে এই প্রতারককে দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। পাঠকদের সার্থে সেই আইডির লেখা হুবুহ তোলে ধরছি।

‘ হোটেল বয় থেকে কোটিপতি মিসবাউল ইসলাম’

পুরো নাম মিসবাউল ইসলাম কয়েস। ২০০০ সালের দিকে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সে জিন্দাবাজার এলাকায় গ্রাম বাংলা রেস্টুরেন্টে চাকরি নেয় হোটেল বয় হিসেবে। নগরীর এই হোটেলটির অবস্থান ছিল সিলেট জিন্দাবাজার ফরিদ প্লাজায় যার মালিক ছিলেন রুহেল আহমেদ। যিনি ছিলেন জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদের স্বামী। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে রুহেল আহমেদ মৃত্যু হলে ব্যবসার হাল ধরেন হেলেন আহমদ। ব্যাবসায়ীক কাজে যখন মার্কেটে অফিসে আসতেন তখন তার গাড়ি থেকে হেলেন আহমেদের ব্যাগ নিয়ে উপরে নিয়ে দিয়ে আসতো এই হোটেল বয় কয়েছ। রেস্টুরেন্ট এর কাজ শেষ হওয়ার পরে তার নিয়োগ হয়ে যায় হেলেন আহমদের মার্কেট অফিসে এরপর থেকেই তার ভাগ্য খুলে যায়। একসময় সে হেলেন আহমেদের আস্থাভাজন হয়ে যাওয়া হেলেনা আহমেদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে এবং সে হেলেনা আমাদের নিজ বাসভবনে দীর্ঘদিন বসবাস করে। কখনো সে নিজেকে হেলেন আহমদের স্বামী পরিচয় দিয়ে, কখনো ব্যবসায়িক পাটনার কখনো হেলেন আহমেদের আইনজীবী হিসেবে তার পরিচয় দেয়। হেলেন আহমদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পরে সে তালাক দেয় তার প্রথম স্ত্রীকে, যার বাড়ি দক্ষিণ সুরমার বরই কান্দি এলাকায় বলে জানা গেছে। হেলেনের সাথে অবৈধ সম্পর্কে থেকেও সে পরে আবার বিয়ে করে আরেক তরুনীকে যার বাড়ি সিলেট এর বিশ্বনাথ যার একটি সন্তানসহ সেই মহিলাকে সে তালাক দিয়ে দেয়, এর পরে আরও একটি বিবাহ করে এবং হেলেন আহমদের সাথেও অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যায়। হেলেন আহমেদের অফিসের যত তরুনীদেরকে সে চাকরি দিত তাদের সাথে সে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করত। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সে নিজেকে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিত এবং হাইকোর্টের বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সদস্য হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত করে দিয়েছেন এই হেলেন আহমদ। হেলেন আহমদ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তার নেতৃত্বে সিলেটের বেশ কিছু মহিলারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ এর মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে এবং বিরুদ্ধে ও বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আব্দুল মোমেন সাহেবের পিএস জুয়েল আহমদের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রবাসীদের জমি দখলের সাথে হেলেনের অন্যতম সহযোগী মিসবাউল ইসলাম। সিলেটের অনেক সংবাদ কর্মীদের বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়েছে এই মিসবাউল ও হেলেন গংরা!

বর্তমানে এই বহুরূপী নারী লোভী মিসবাউল নিজেকে জামায়াতের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে এবং সে সরকারি কলেজের শিবিরের সাথে যুক্ত ছিল হিসেবে ও প্রচার করছে। বর্তমানে জামায়াত নেতাদের ছবি দিয়ে সে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট করছে তার ফেইসবুক একাউন্টে। তাহার বাড়ি গোলাপগঞ্জ এলাকায় হওয়ায় সে জামায়াত নেতা জনাব মাওলানা হাবিবুর রহমানের আস্থাভাজন এবং আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছে সব জায়গায় বিভিন্ন জামায়াত শিবির নেতাকর্মীর কাছে। সে বর্তমানে জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেছে সে মামলা থেকে বাঁচার জন্য। সে জামায়াত শিবির পরিচয় দিয়ে তার অপকর্ম এবং হেলেন আহমদের অপকর্ম এবং মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

বর্তমানে সকল রাজনৈতিক দলের উচিত এই সব আওয়ামী দূস্কৃতি কারীদের প্রসাশনের হাতে তুলে দিয়ে সঠিক বিচার নিশ্চিত করা।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2024 Sylhetbela24.com
Theme Customized By BreakingNews