পুষ্টির দিক বিবেচনায় পেয়ারার থেকে ভালো ফল খুব কম আছে। এটি এমন এক ফল, যা ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। নিয়মিত এই ফল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। হজমে ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় ফাইবার সরবরাহ করতেও দারুণ কার্যকরী এই ফল।
কিন্তু যতই পুষ্টিকর হোক, পেয়ারা সবার জন্য উপযুক্ত নয়। শরীরে বেশ কিছু সমস্যা থাকলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাহলে কোন কোন সমস্যা থাকলে পেয়ারা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন, জেনে নিন—
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিক রোগীরাও নিশ্চিতে খেতে পারেন পেয়ারা। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার।
ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে দেয় না পেয়ারা। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা পেয়ারা খেলে কতটা খাবেন, সেটা পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভালো। পেয়ারা স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই যেসব ডায়াবেটিক রোগী নিয়মিত ওষুধ বা ইনসুলিন নেন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
পাচন সমস্যা
পেয়ারায় ফাইবার ও ফ্রুকটোজের পরিমাণ বেশি। যাদের অন্ত্র সংবেদনশীল বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি ডায়রিয়া, ফোলাভাব ও পেট ব্যথার কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফ্রুকটোজ সহ্য হয় না এমন ব্যক্তিদের এই ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক হওয়া উচিত। অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে হজমের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
ত্বকের সমস্যা
পেয়ারার পাতা থেকে তৈরি নির্যাস অনেক সময় ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু যাদের একজিমা বা চামড়ায় সংবেদনশীলতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি চুলকানি, জ্বালা বা সংক্রমণের সমস্যা বাড়াতে পারে।
কিডনির সমস্যা
পেয়ারায় পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলেও কিডনির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা থাকলেও পেয়ারা খেতে নিষেধ করা হয়।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী
সাধারণত ফল হিসেবে পেয়ারা খাওয়া নিরাপদ, তবে এই ফলের পাতার নির্যাস বা সাপ্লিমেন্ট নিয়ে গবেষণা সীমিত রয়েছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এগুলো ব্যবহার করা উচিত নয়।
খালি পেটে
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যা থাকলে খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এতে অস্বস্তি, পেটে জ্বালা বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এর জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, খাওয়ার পর বা স্ন্যাকস হিসেবে পেয়ারা খাওয়া ভালো।
পেয়ারা খাওয়ার পর কোনোরকম সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।