দুইযুগ আগে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) ও আসামিদের আপিল-জেল আপিলের রায় আংশিক ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি রায় আগামী ১৩ মে ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই তারিখ দেন। এদিন রায় ঘোষণার শুরুতেই আদালত বলেন, আজ ঘটনা ও সাক্ষী পর্যালোচনা করা হবে।
বাকিটা (রায়) পরবর্তী তারিখে (১৩ মে) হবে।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী ১৩ মে রায়ের অপারেটিং পার্ট (কার্যকরী অংশ) বা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ঘটনাস্থলে ৯ জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওইদিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন।
২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিচারিক আদালত নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের রায় পাওয়া বাকি আসামিরা হলেন, আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
কোনো মামলায় বিচারিক আদালত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিলে, সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। এ রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। অন্যদিকে আসামিরাও আপিল ও জেল আপিল করেন। ২০১৬ সালে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে তিনটি বেঞ্চে মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়ায় গত বছর ৮ ডিসেম্বর মামলাটি শুনানির জন্য ফের কার্যতালিকায় তোলা হলে শুনানি শুরু হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হলে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রাখা ছিল। গত ৩০ এপ্রিল আদালত জানায় বৃহস্পতিবার (০৮ মে) রায় ঘোষণা করা হবে।