মৌলভীবাজারের রাজনগরে এক নারীর মৃত্যুকে শুরুতে স্বাভাবিক মনে করে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হলেও পরবর্তীতে ময়নাতদন্তে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ মেলে। ঘটনার প্রায় চার মাস পর রাজনগর থানা পুলিশ মোঃ খলিল মিয়া ফেছাদ (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার জেলা পুলিশ কর্তৃক গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে গলা টিপে ওই মহিলাকে হত্যার দায় স্বীকার করেন খলিল মিয়া।
পুলিশ আরও জানায়, গত ৩১ মার্চ সকাল ৬টার দিকে রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের শাহানা বেগমকে (৫১) নিজ ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার আত্মীয়স্বজন কারো উপর কোন সন্দেহ নেই বলে বিষয়টি স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে পুলিশকে জানায়। রাজনগর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষে ১ এপ্রিল একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-০৪/২০২৫) দায়ের করে।
পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিম শাহানা বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ তথ্য পেয়ে নিহতের মেয়ে বিউটি বেগম রাজনগর থানায় হত্যা মামলা (নং-০৪, তারিখ: ০৪/০৮/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) দায়ের করেন।
মামলার তদন্তভার পাওয়া এসআই (নিঃ) অরূপ সরকার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে একই গ্রামের খলিল মিয়াকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত খলিল মিয়া জানায়, নিহত শাহানা বেগম এলাকায় মানুষের কাছে সুদে টাকা লেনদেন করতেন। তার সাথেও শাহানা বেগমের সুদে টাকা লেনদেন ছিল। মূলত এই টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে শাহানা বেগমের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। ঘটনার দিন রাতে খলিল মিয়া নিহতের বাড়িতে যায়। সেখানে টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে শাহানাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে গলায় চাপ দিয়ে হত্যা করেন।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোবারক হোসেনের বরাত দিয়ে জেলা পুলিশ আরও জানায়, মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করলে জানতে পারব।