আইসিসি টি২০ র্যাংকিংয়ে নেদারল্যান্ডসের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠের পারফরম্যান্সেও সেটারই ছাপ দেখা গেল স্বাগতিকদের। সিলেটে আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই দাপট দেখিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে টাইগাররা। আর এই জয়ে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল লিটন কুমার দাসের দল।
এদিন সিলেটে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান করে নেদারল্যান্ডস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেছেন তেজা। বাংলাদেশের হয়ে ২৮ রানে ৪ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার তাসকিন। জবাবে খেলতে নেমে ১৩ ওভার তিন বলে ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের অপরাজিত ফিফটি করেন স্বাগতিক অধিনায়ক লিটন। তবে ম্যাচসেরা লিটন নয় হয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
যদিও তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াই করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডস। তবে প্রথম ম্যাচেই ডাচ অধিনায়ককে হতাশায় ডুবিয়েছে টাইগাররা। ব্যাটে-বলে পারফরম্যান্স করে সিলেটে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে সিরিজ শুরু করেছে লিটন বাহিনী।
আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) সিলেটে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। জবাব দিতে নেমে ৩৯ বল এবং ৮ উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাট চালাতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি ইমন। ৯ বলে ১৫ রান করে আউট হন তিনি।
তিনে ব্যাট করতে নেমে বলে বলে বাউন্ডারি মেরে রান তুলতে থাকেন লিটনও। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তানজিদ তামিম। ৩২ বলে নিজেদের ৫০ রানে জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। এরপর ২৩ বলে ২৯ রান করে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন তামিম।
তার বিদায়ের পর পিচে আসেন সাইফ হাসান। শুরুতে ব্যাট চালাতে কিছুটা সময় নিলেও পরে বলে বলে বাউন্ডারি মেরে রান তুলতে থাকেন এই ডান হাতি ব্যাটার। অপর প্রান্ত আগলে রেখে ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন। শেষ পর্যন্ত সাইফের ১৯ বলে ৩৬ রান এবং লিটনের ২৯ বলের অপরাজিত ৩৬ রানে ভর করে ৩৯ বল এবং ৮ উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নেদারল্যান্ডসকে ভালো শুরু এনে দেন ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ১৫ বলে ২৩ রান করে তৃতীয় ওভারে তাসকিনের করা প্রথম বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ডান হাতি ব্যাটার। এরপরই রানের গতি কমে যায় ডাচদের।
তবে উইকেট ধরে রেখে পাওয়ার প্লেতে ৩৪ রান তোলেন বিক্রমজিৎ সিং ও তেজা নিদামানুরু। সপ্তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় স্পেল করতে আসেন তাসকিন। এবারেও প্রথম বলেই উইকেট, ছক্কা হাকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন বিক্রমজিৎ। ১১ বলে ৪ রান করেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে স্কট এডওয়ার্ডসকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন তেজা নিদামানুরু। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেনি দুজনের কেউই। দশম ওভারে সাইফ হাসানকে বোলিংয়ে আনেন লিটন। আর বোলিংয়ে এসেই বাজিমাত করেছেন তিনি।
চতুর্থ বলে এডওয়ার্ডস (১২) এবং ওভারের শেষ বলে নিদামানুরুকে ২৬ রানে ফেরান তিনি। এরপর সেভাবে কেউ দলের হাল ধরতে পারননি। শারিজ আহমেদ (১৫), কাইল ক্লেইন (৯) এবং নোয়াহ ক্রুস ১১ রানে আউট হন।
শেষ পর্যন্ত টিম প্রিঙ্গল ১৪ বলে ১৬ রান এবং আরিয়ান দত্তের ১৩ রানে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানের লড়াকু পুঁজি পায় নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। এ ছাড়াও সাইফ হাসান দুটি এবং মুস্তাফিজুর শিকার করেন এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ২০ ওভারে ১৩৬/৮ (ও’ডাউড ২৩, ভিক্রামজিৎ ৪, নিদামানুরু ২৬, এডওয়ার্ডস ১২, শারিজ ১৫, ক্রোস ১১, ক্লেইন ৯, প্রিঙ্গল ১৬*, আরিয়ান ১৩; মেহেদি ৪-০-২১-০, শরিফুল ৪-১-৩০-০, তাসকিন ৪-০-২৮-৪, মুস্তাফিজ ৪-০-১৯-১, রিশাদ ২-০-১৬-০, সাইফ ২-০-১৮-২)।
বাংলাদেশ: ১৩.৩ ওভারে ১৩৮/২(পারভেজ ১৫, তানজিদ ২৯, লিটন ৫৪, সাইফ ৩৬; আরিয়ান ৩-০-৩০-১, ক্লেইন ২-০-২৬-০, ডোরাম ৩-০-২৩-০, ফন মিকেরেন ২-০-১৭-০, শারিজ ১-০-১২-০, প্রিঙ্গল ২-০-১৬-১, ভিক্রামজিৎ ০.৩-০-১৪-০)
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: তাসকিন আহমেদ।