যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প–এর নাম নোবেল শান্তি পুরস্কার-এর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে লোকমুখে গত কিছু দিন ধরেই আলোচনা চলছে। তবে প্রশ্ন হলো- তিনি কি সত্যিই এই পুরস্কার অর্জন করতে পারবেন? ট্রাম্পের দাবি, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ থামানোসহ নানামাত্রিক উদ্যোগকে তার নোবেল অর্জনের পথ প্রশস্ত করেছে।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে “প্রথম ধাপের শান্তি পরিকল্পনা’ ঘোষণা এক্ষেত্রে হাইলাইট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এ নিয়ে ব্যাপক সংশয় ও বিশ্লেষণও রয়েছে।
এটা সত্য যে পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে নোবেল কমিটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ও সামাজিক সংহতির কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দেয়, শুধু রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বা চুক্তিই যথেষ্ট নয়।
ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তারা আমাকে পুরস্কার দেবে না’। আবার কিছু সংবাদে দাবি করা হয়েছিল যে, নোবেল কমিটি ট্রাম্পকে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে কিন্তু তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলা হয়েছে।
নোবেল কমিটিতে উদ্যোগ বা প্রার্থীর উপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ পছন্দ নয় বলে বেশ অনেক সদস্য জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের প্রচারাভিযান যেভাবে চলেছে, সেটি তার নোবেল প্রাপ্তির পথেধ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
ফলে ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন, এই সম্ভাবনা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা যায় না;। আবার বাস্তবতা ও পুরস্কার নির্দেশিত মূল্যবোধ বিবেচনায় তাকে নোবেল পুরস্কারে মনোনীত করাও চ্যালেঞ্জিং।
জানা গেছে, এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে একটি বিষয় প্রায় নিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পুরস্কার পাচ্ছেন না, তা তিনি যতই প্রত্যাশা করুন না কেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কে পাবেন?
বর্তমানে বিশ্ব পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ১৯৪৬ সালে সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক সংঘাত নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরি শুরু করে। এর পর থেকে বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র সংঘাতের সংখ্যা ২০২৪ সালের মতো কখনোই এত বেশি ছিল না।
ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, তিনি আটটি সংঘাতের সমাধান করে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য হয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তাকে কমিটি বেছে নেবে না; অন্তত এ বছরের জন্য।
সুইডেনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পিটার ভ্যালেনস্টিন এএফপিকে বলেন, ‘না, এ বছর ট্রাম্প নোবেল পাচ্ছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে হয়তো পরের বছর? তখন হয়তো তার নানা উদ্যোগ, বিশেষ করে গাজা সংকট নিয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে ধোঁয়াশা কেটে যাবে।’
ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার নরওয়ের নোবেল কমিটি স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (০৯০০ জিএমটি) বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে এ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাবে।