হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের অলিপুর (১৪৪ কিমি) ও শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ গোলচত্বর (১৫৫ কিমি) এলাকার পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জমিতে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার ১৫ জুলাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লব কুমার হোম দাসের নেতৃত্বে এবং সওজ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে, হাইওয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে টং দোকান, চায়ের স্টল, কাঠের ছাউনি ও বিভিন্ন স্থায়ী অবৈধ কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়। প্রায় দুই একর সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন সওজ কর্মকর্তা।
অভিযানে অংশ নেন শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দলীপ কান্তি নাথ এবং শিল্প পুলিশ-২-এর অ্যাডিশনাল এসপি ফয়ছল আহমেদ। বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন।
ইউএনও পল্লব কুমার হোম দাস বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের পাশে সরকারি জমি দখল করে অবৈধ দোকান গড়ে তোলা হয়েছিল। এতে যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছিল। অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রজওয়ান করিম বলেন, “দীর্ঘদিন নানা প্রতিবন্ধকতায় উচ্ছেদ সম্ভব হচ্ছিল না। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। এবার সফলভাবে দখলদারদের উচ্ছেদ করা গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজ উদ্বোধন হওয়া পুলিশ বক্স শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি আইনের শাসনের প্রতীক। এখন থেকে ওলিপুর শিল্প এলাকায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশ টহল থাকবে।”
অভিযানের সময় কয়েকজন দোকানদার মৌখিক আপত্তি জানান। উচ্ছেদ হওয়া দোকানি কুদ্দুস মিয়া বলেন, “আমার দোকানেই সংসার চলত। কোনো নোটিশ ছাড়াই ভেঙে দেওয়া হলো। এখন আমি কোথায় যাবো?”
তবে প্রশাসন দাবি করেছে, দুই দিন আগেই মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও ভবিষ্যতে আবারও দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, “উচ্ছেদ হয় ঠিকই, কিন্তু কিছুদিন পর আবার দখল হয়ে যায়। এবার যেন তা না হয়, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দরকার।”
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, “এ অবৈধ স্থাপনাগুলো যান চলাচলে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল। ভবিষ্যতে আর কাউকে মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়তে দেওয়া হবে না।”
অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত জমিতে দোয়ার মাহফিল ও নতুন নির্মিত পুলিশ বক্স উদ্বোধন করা হয়। এতে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।