ঈদকে সামনে রেখে সিলেটের শপিংমলগুলোতে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। এর আগে দোকানে দোকানে ভিড় দেখা গেলেও বিক্রির পরিমান ছিল হতাশাজনক। তবে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি বিপনীবিতান ঘুরে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হয়। তাঁরা জানান, এখন ক্রেতাদের ভিড়ের পাশাপাশি বিক্রির পরিমানও বেড়ে গেছে। রাতদিন সমানতালে চলছে কেনাকাটা।
সিলেটের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, কুমারপাড়া ও নয়াসড়কসহ বিভিন্ন মার্কেটে ২০ রমজানের পর থেকেই বাড়ছে ভিড়। তবে এবারের ঈদ বাজারে শাড়ির বিক্রি কম হলেও পাকিস্তানি পোশাকের চাহিদা তুঙ্গে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রবাসীদের কম উপস্থিতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাজারের চিত্র কিছুটা বদলেছে। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক দুর্নীতিবাজ দেশ ছেড়েছে, আর প্রবাসীদের আগমনও কম থাকায় ব্যবসা তুলনামূলক কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন।
তিনি বলেন, প্রতি ঈদে ফুটপাত দখল করে হকাররা জনভোগান্তি সৃষ্টি করলেও তাদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। ফলে মার্কেট ও বিপণী বিতানের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন।
পবিত্র রমজান মাস এলেই সিলেট শহরের ফুটপাতগুলো দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। হকার ও দোকানিদের দখলে চলে যাওয়ায় সাধারণ পথচারীরা হাঁটার জায়গা পান না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা গাড়ির রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন, যা বাড়িয়ে দিচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
পুলিশ বলছে, ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। সিলেট নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, আম্বরখানা ও চৌহাট্টা এলাকায় এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলে এসব জায়গায় কেনাকাটার ভিড় বাড়ে, তখন ফুটপাতে হাঁটা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে ওঠে।
সিলেট নগরীর কুয়ারপারের বাসিন্দা ছুটন মিয়া জানান, রমজান এলেই ফুটপাত দখল হয়ে যায়। প্রশাসন দেখেও যেন কিছু করতে পারে না। রাস্তায় মালামাল ছড়িয়ে রাখায় পথচারীরা হাটতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে।
সিলেট সিটি সেন্টারের ক্রেতা সুলতানা বেগম বলেন, ঈদ মার্কেট ব্যবসায়ীদের উৎসবের সময়। তারা ইচ্ছামতো দাম হাকান, এটা দেখার কেউ নেই। মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস ওঠে ঈদ মার্কেটে আসলে।
ব্লু ওয়াটার শপিং সিটিতে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা রিনা আক্তার জানান, ঈদ বাজারে কাপড়ের দামের কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। এক দোকানে এক হাজার, তো পাশের দোকানে দেড় হাজার। আবার একই পণ্য এক দোকানে পাঁচ হাজার, তো আরেক দোকানে দশ হাজার টাকা; এরকমই দাম হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে ঈদ বাজারে মানুষের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা টিম। পুলিশের ২৮টি টিম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারিও চলছে বলে সময়ের আলোকে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মিডিয়া মো. সাইফুল ইসলাম।
ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে সিলেটের বাজার। তবে দাম নিয়ে অসন্তুষ্টি থাকলেও শেষ মুহূর্তে বিকিকিনি বাড়বে এমন প্রত্যাশা ক্রেতা বিক্রেতাদের।
সিলেট বেলা / এস এস/ ০৫