1. admin@sylhetbela24.com : admin :
June 21, 2025, 1:44 pm
বিজ্ঞপ্তিঃ
সিলেট বেলা ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম! আপনার আশে পাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ আমাদেরকে জানাতে sylhetbela247@gmail.com এ পাঠিয়ে দিন। আমরা যাচাই বাছাই শেষে তা যথারীতি প্রকাশ করবো। আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

সিসিকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে গাড়ি চালক শাকিলের প্রতারণা

  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫
  • 473 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

বিল্লাল হোসেন শাকিল (২৬)। কাজ করেন সিলেট সিটি করপোরেশেনের (সিসিক) পরিবহন শাখায়। পেশায় একজন গাড়ি চালক। চাকুরীতে যোগদানের বছর না ঘুরতেই একাধিক অভিযোগ শাকিলের বিরুদ্ধে। নিজের চাকুরী স্থায়ী না হলেও বিভিন্ন লোকজনকে টাকার মাধ্যমে চাকুরী পাইয়ে দিতে তদবির বাণিজ্য শুরু করে শাকিল। এই বাণিজ্যের সাথে জড়িত হিসেবে নাম এসেছে পরিবহন শাখার সর্বোচ্চ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন গাড়ি চালকের। ফলে প্রতারিত হওয়া ভুক্তভোগীরা পরিবহন শাখায় অভিযোগ করেও নেওয়া হয় নি কার্যকর পদক্ষেপ। উপরন্তু ভয়-ভীতিসহ অভিযোগকারীদের হুমকী প্রদর্শন করা অব্যাহত রয়েছে।

পরিবহন শাখায় খোঁজ নিতে গেলে বের হয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই শাখায় কর্মরত কয়েকজন চালকের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডকেট সিসিকে চাকুরী দেবার নাম করে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু কাজ না হলে পরিবহন শাখার এক বড় কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করার কথা বলে। অপেক্ষার সময় শেষ হলে ফের চলে নানা বাহানা। এরপর শুরু হয় ভুক্তভোগীদের ভয়-ভীতিও হুমকী প্রদর্শন। এই সিন্ডিকেটের নাম রামিম-শাকিল।

চাকুরী দেবার নাম করে চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে রাহিম-শাকিল সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের প্রধান কে-এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিবহন শাখার কয়েকজন জানিয়েছেন, ‘উনার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই আমাদের’।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী এবং প্রতারণার শিকার হওয়া নগরীর রায়নগরের বাসিন্দা বিষ্ণুজিত রায় তমাল জানান, সিসিকের পরিবহন শাখার গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেনের সাথে আমার কোন পূর্ব পরিচয় ছিল না। স্নাতক সম্পন্ন করার পর যখন একটি চাকুরীর জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছি, তখনই এক আত্মীয়ের মাধ্যমে শাকিলের সাথে পরিচয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে শাকিলের সাথে কথা হয় চাকুরী নিয়ে। এ সময় চাকুরীর জন্য ২ লাখ টাকা দাবি করে শাকিল। একই সাথে ব্যক্তিগত জরুরী প্রয়োজনে ১ মাসের জন্য ধার হিসেবে আরও ২ লাখ টাকার কথা আমাকে জানায়। আমি তার কথায় আশ্বস্থ হয়ে কথামতো নগদ ও চেকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করি। তার বিপরীতে শাকিলের স্বাক্ষরিত ব্যাংকের চেক, সাক্ষি হিসেবে শাকিলের পিতার স্বাক্ষরসহ লিখিত ডকুমেন্ট করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময় থেকে নির্ধারিত তারিখ চলে গেলেও শাকিলের কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায় নি। অগত্যা বিষয়টি নিয়ে পরিবহন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মোহাম্মদ উল্লাহ সজীব মহোদয়কে আবগত করি। তিনি শাকিলকে সামনে নিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি গ্রহন করে গেল মাসের ৩১ মে এর মধ্যে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখেও গাড়ি চালক শাকিল টাকা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। পরিবহন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মোহাম্মদ উল্লাহ সজীব মহোদয় তখন বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ থাকেন। এ ব্যাপারে তিনি শাকিলের প্রদেয় চেক ডিসঅনার করে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান।

একই অভিযোগ অপর এক ভুক্তভোগীর। তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে তিনি জানান, ‘আমার বিষয়টি নিয়ে আবারও একটি তারিখ দেওয়া হয়েছে। ওই তারিখ মিস হলে তখন সবকিছুই প্রকাশ্যে আনতে পারবো’।

বিল্লাল হোসেন নিজেকে সিটি কর্পোরেশনের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার নিজের লোক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিজনের কাছ থেকে তিনি গড়ে প্রায় দুই লাখ বিশ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুত চাকরি না দিয়ে বছরের পর বছর ধরে তাদের ঘুরিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সূত্র জানায়, বিল্লালের এ প্রতারণা কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করে রাহিম নামে আরও এক ব্যক্তি, যিনি একই পরিবহন বিভাগে কর্মরত। তারা দু’জনে মিলে একটি অসাধু চক্র গঠন করেছেন। গোপন তথ্য অনুযায়ী, এই চক্রের সদস্যরা জুয়া ও মাদকাসক্ত, এবং মূলত অর্থ উপার্জনের জন্যই প্রতারণাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

বর্তমানে অন্তত দুইজন ভুক্তভোগী দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চাকরির আশায় ঘুরছেন। কিন্তু না পেয়েছেন চাকরি, না ফিরে পেয়েছেন তাদের কষ্টার্জিত অর্থ। ভুক্তভোগীরা জানান, টাকা ফেরত চাইলে নানা অজুহাতে তাদের এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং এক প্রকার মানসিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।

সম্প্রতি ভুক্তভোগীরা সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। জানা গেছে, একজন কর্নেল পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি শুনেছেন। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2024 Sylhetbela24.com
Theme Customized By BreakingNews