শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের শাল্লায় যুবলীগ নেতার নির্দেশে বাজারের তিনটি ভিটে দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ২নম্বর হবিবপুর ইউনিয়নের শাসখাই বাজারে।
স্থানীয়রা জানান, ওই যুবলীগ নেতা এখনো স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে শাসখাই গ্রামের প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতাব্বর সচীপদ দাসসহ আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীকে সঙ্গে নিয়ে অন্যের নামে বন্দোবস্ত রেকর্ডীয় তিনটি ভিটে রতন চন্দ্র দাশের নির্দেশে জোরপূর্বক ঘর তৈরি করে প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে যায়। জানা যায়, তিনটি ভিটের বিক্রয়মূল্য প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে ও কাগজপত্র দেখে জানা যায়, দত্তপাড়া মৌজার ১০২৯ খতিয়ানের, ২৯ জেল নম্বর এর ৪২৮ দাগ নম্বরের ৩ শতক জায়গাসহ সরকার এক একর জায়গা বন্দোবস্ত দেয় স্থানীয় বাসিন্দা মনমোহন দাসকে। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাশের স্থানীয় প্রভাবে সেই জায়গা আর দখল বুঝে নিতে পারেননি মনমোহন দাস। অবশেষে গত বছর মনমোহন দাস মারা যাওয়ায় সেই জায়গা আর কোনোভাবেই দখলে নিতে পারেননি তার ছেলেরা। তাই অনেকটাই নিরূপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকর্মী কমিশনার ভূমি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত মনমোহন দাসের ছেলে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস।
লিখিত অভিযোগে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস উল্লেখ করেন, বন্দোবস্ত মালিক সূত্রে গত নয় বছর যাবত উল্লিখিত তফশিল বর্ণিত ভূমিতে ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে শাসখাই গ্রামের সচীপদ দাস, বুঝলাল দাস, জ্ঞান রঞ্জন দাশ, হরিলাল দাসসহ আরও ৭-৮ জন প্রভাবশালী জোরপূর্বক দীগেন্দ্র চন্দ্র দাসের ভূমিতে রাতারাতি ঘর বানিয়ে ফেলে। বাদী দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস বাধা দিলে নামাঙ্কিত বিবাদী গং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উল্টো প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, পাঁচ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে পঞ্চায়েতের ব্যবস্থা করলে রতন চন্দ্র গংরা অভিযোগকারীর ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এবিষয়ে দীগেন্দ্র চন্দ্র দাস আরও বলেন, ‘কাগজসূত্রে এই জায়গার মালিক আমার বাবা। কিন্তু যুবলীগ নেতা রতন চন্দ্র দাস এখনো স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে একই গ্রামের সচীপদ দাসসহ আরও কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে আমরা দখলে যেতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি।’
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত রতন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার নিজের জায়গায় ঘর বানাইছি।’ জায়গার কাগজপত্র আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতো কথা কওয়া যেত না। যেটা খুশি সেটা লিখতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েও কিচ্ছু করতে পারেনি। আমি আমার জায়গায় ঘর বানাইছি এতো জবাবদিহিতার কি আছে। একপর্যায়ে তিনি এই প্রতিবেদকের সাথে বাজে ভাষায় কথা বলেন।
এদিকে একই বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি সচীপদ দাস দিয়েছেন ভিন্ন বক্তব্য। তিনি বলেন, জায়গাটির মালিক সৈকত দাস। সৈকত দাস আমাদেরকে দান করে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি (ভারপ্রাপ্ত) পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, এসিল্যান্ড অফিস থেকে লোক পাঠিয়েছিলাম। যখন বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল তখনতো সরকার সেই জায়গা বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন যদি কোনো সমস্যা হয় সেটা দেখবে আদালত। স্থানীয়ভাবেও এর সমাধান করা যেতে পারে।