সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের কানাইখালী নদীর তীর দখলে নিয়ে মাটি ভরাট করে দালান কোঠা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা পরিচয়দানকারী মোজাম্মেল খানের বিরুদ্ধে।
ফেনারবাঁক ইউনিয়নের এই নদী উপজেলার পাকনা হাওরের উজান অংশ ভীমখালি ইউনিয়ন ও নয় মৌজা এলাকার হাজার হাজার কৃষকের বোরো জমির পানি নিষ্কাশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। এ পথে দালানকোঠা নির্মাণ করায় সংকুচিত হয়ে পড়ছে কানাইখালী নদী। ফলে সময়মতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। জমিতে পিছিয়ে ফসল রোপন করতে হয় কৃষকদের। ফলে আগাম বন্যার শঙ্কা তাড়া করে কৃষকের বুকে।
স্থানীয়রা জানান, জামালগঞ্জের এক সময়ের বিএনপি নেতা ছিলেন মোজাম্মেল খান। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনি বনে যান আওয়ামী লীগ। সেখানকার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা এমপি শামীমা আক্তার খানমের হাত ধরে ঘটে তার উত্থান। তার খুঁটির জোরেই কানাইখালী নদীর তীর দখল করে দানকোঠা নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন মোজাম্মেল খান। ভয়ে কেউ তখন প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। ৫ আগষ্টের পর পট পরিবর্তনের পর তিনি হয়ে উঠেন বিএনপি। ফেসবুকে বিএনপি’র প্রচারণা করতে দেখা যায়।
জানা গেছে, জায়গা দখলে রাখতে তিনি এখন বিএনপি’র পরিচয় তুলে ধরছেন। তিনি ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে।
ফেনারবাঁক গ্রামের কৃষক আক্কার হোসেন বলেন, মোজাম্মেল খান নদীর তীর দখল করে দালান কোঠা করেছেন। এতে নদীর পানি প্রবাহের পথ ছোট হয়ে আসছে। হাওরের কৃষকরা এখন সময় মতো কৃষি জমি রোপন করতে পারেন না। এটি আমাদের জন্য খুব ক্ষতি হয়েছে।
কৃষক জানু মিয়া বলেন, মোজাম্মেল তার ক্ষমতা দেখিয়ে নদীর পাড় দখল করে দালান কোঠা বানাচ্ছে। এটি অন্যায়। তার দখলের কারণে পায়ে চলার মূল রাস্তা ও নদী পথ ছোট হয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসীর ক্ষতি করেছে সে। দ্রুত এটি ভেঙ্গে দিয়ে নদীর পাড় উন্মুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
ওই এলাকার তৌফিক চৌধুরী বলেন, মোজাম্মেল খান নদীর তীর দখল করায় কানাইখালী নদীর পথ পানি প্রবাহে বাধাঁ হয়েছে। যা চলতি বছর ভীমখালী ইউনিয়ন নয় মৌজা এলাকাসহ অনেক গ্রামের কৃষকদের কৃষি কাজ ব্যাহত হয়েছে। হাজার হাজার কৃষকের বোরো জমি রোপনে ক্ষতি করেছে। এই নদী দিয়ে পাকনা হাওরের উজানের পানি নিষ্কাশন হতো। শুধু তাই নয় দালান কোঠা নির্মাণ করে জানসাধারণের চলার রাস্তাও সে দখল করেছে। যা পথচারীরা যাবাহন নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলা ফেরা করতে পারেনা।
জামালগঞ্জের পশ্চিম ফেনারবাঁক গ্রামের সামনে কানাইখালী নদীর তীর দখল করে দালান কোঠা নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে মোজাম্মেল খান জানায়, নদীর তীর খালি আছে সে জন্য ঘর নির্মাণ করেছি। প্রয়োজন হলে ভেঙ্গে ফেলব।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো কোন সুরাহ হয়নি।
জামালগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীনুর বলেন, নদীর তীর দখল করে দালানকোঠা নির্মাণের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এরকম হয়ে থাকে দখল উচ্ছেদ করা হবে।