বেলা ডেস্ক :
১১ মার্চ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তাদের সাক্ষাতের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যের সঙ্গে ‘কিছু মতবিরোধ’ প্রকাশ করেছেন দলটির প্রধান সংগঠক (উত্তর) সারজিস আলম।
রোববার (২৩ মার্চ) দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের পোস্টে সারজিস লিখেছেন, ‘হাসনাত সেদিন সেনাপ্রধানের বক্তব্য যেভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন, গ্রহণ করেছেন এবং ফেসবুকে এটি সম্পর্কে লিখেছেন, তা আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছুটা ভিন্ন’।
নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সেনাবাহিনী হাসনাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছে, যেখানে তিনি দাবি করেছেন, ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা তাকে এবং আরও দুজনকে আওয়ামী লীগের তথাকথিত ‘পরিশোধিত’ অংশ মেনে নিতে চাপ দিয়েছিলেন’।
‘তবে, হাসনাতের ফেসবুক পোস্টে যেভাবে সুর ফুটে উঠেছে, তাতে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, কথোপকথনটি এতোটা চরম ছিল না। অবশ্যই, অন্য যেকোনো দিনের তুলনায়, কথোপকথনটি অবশ্যই আরও সরল এবং আত্মবিশ্বাসী ছিল’- বলেন সারজিস।
তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্ট এবং সরাসরি মতামত প্রকাশ করা হয়েছিল যে, দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে, নির্বাচনে পরিশীলিত আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রয়োজন’।
সারজিস তার ফেসবুক পোস্টের শুরুতে বলেন, ‘সেদিন (১১ মার্চ) হাসনাত এবং আমি সেনাপ্রধানের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমাদের দলের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরও আমাদের সাথে থাকার কথা ছিল। তবে, শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগত সমস্যায় তিনি যেতে পারেননি’।
তিনি আরও বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেদিন আমাদের সেনানিবাসে ডাকা হয়নি। বরং, যে কোনো প্রশ্ন বা ব্যাখ্যার জন্য যখনই প্রয়োজন হতো, আমরা সেনাপ্রধানের সামরিক উপদেষ্টার সঙ্গে বার্তা বিনিময় করতাম’।
‘যেদিন (২৬ ফেব্রুয়ারি) পিলখানা হত্যার বার্ষিকীতে সেনাপ্রধান বেশ কঠোর বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’। আমি তার সামরিক উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে অস্বাভাবিক বা উদ্বেগজনক কিছু অনুভব করছেন কি না। আমি উল্লেখ করেছিলাম, সেনাপ্রধানের ভাষণ তুলনামূলকভাবে কঠোর বলে মনে হয়েছিল’।
তিনি বলেন, ‘উত্তরে, তিনি (সামরিক উপদেষ্টা) আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তুমি কি সরাসরি এই বিষয়ে আলোচনা করতে চাও?’। আমি বলেছিলাম, ‘আমরা পারব’। এরপর, আমরা সেদিনই সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেনা ভবনের নির্ধারিত কক্ষে, আমরা মাত্র তিনজন ছিলাম- সেনাপ্রধান, হাসনাত এবং আমি’।
‘মানুষ হিসেবে, বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন উপায়ে নিজের মতামত পর্যবেক্ষণ এবং ব্যাখ্যা করে। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, আমি সেদিনের বিবৃতিটিকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ হিসেবে দেখি না, বরং ‘মতামতের সরল প্রকাশ’ হিসেবে দেখি’- লিখেছেন সারজিস আলম।
তিনি আরও বলেন, ‘মতামত প্রকাশ করা’ এবং ‘প্রস্তাব দেয়া’- এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে, আগের উদাহরণগুলোর তুলনায়, সেনাপ্রধান সেদিন আরও স্পষ্টভাবে কথা বলেছিলেন’।
সারজিস যোগ করেন, ‘পরিমার্জিত আওয়ামী লীগের জন্য ‘চাপ’ ধারণা সম্পর্কে, আমি এটিকে চাপ প্রয়োগ হিসাবে দেখিনি। বরং, তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছিলেন যে, যদি একটি পরিমার্জিত আওয়ামী লীগ আবির্ভূত না হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতিতে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দেবে’।