হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার। অবাধে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে বালু খেকো চক্রটি ক্ষতবিক্ষত করে যাচ্ছে চা বাগান, পাহাড়ি ছড়া, সংরক্ষিত বন ও ফসলি জমি। এতে করে বালু খেকো চক্রটি অল্প দিনে আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হয়ে উঠলেও সরকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন এসব বালু মাফিয়াদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান করলেও স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার বন্ধে কার্যত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা যায়, চুনারঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের পানছড়ি, পঞ্চাশ, ডেউয়াতলী, সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের দেওছড়া ও ইছালিয়া ছড়া থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একাধিক চক্র। পানছড়ি এলাকার রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সংরক্ষিত বনটি। এ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু কার্যত বন্ধ হয়নি বালুখেকোদের তাণ্ডব। আসামিরা জামিনে এসে দেদারসে উত্তোলন করে যাচ্ছে মূল্যবান সিলিকা বালু।
অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সংস্থার কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অবাধে বালু পাচার করছে এই চক্রটি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব অবৈধ বালু পাচারে ব্যবহার করা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বৈধ বালু মহাল এর রশীদ। ফলে নির্দ্বিধায় বালু উত্তোলন ও পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বালুমাফিয়া চক্রটি।
পানছড়ি এলাকায় আসমত উল্লার ছেলে আমজত উল্লাহসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে চলে বালু উত্তোলন। এসব বালু ট্রাক্টরযোগে লালচান্দ চা বাগানের অভ্যন্তরীণ সড়ক হয়ে শাহপুর সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে পাচার করা হয় মাধবপুরসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায়।
অভিযোগ রয়েছে লালচান চা বাগান ও বন বিভাগের রঘুনন্দন রেঞ্জের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাশুহারা দিয়ে ওই সড়ক ব্যবহার করে পাচার করা হয় বালু। ফলে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না চা বাগান কিংবা বন বিভাগের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে রঘুনন্দন রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন ভুঞা বলেন, যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হয় সেটি আমাদের সংরক্ষিত বন থেকে ২০০ মিটারেরও বেশি দূরে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে তারা। বনের ভিতর দিয়ে বালু পাচারের সময় একাধিক গাড়ি আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছিল। আবারও অভিযান চালানো হবে।
একই বিষয়ে চুনারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রবিন মিয়া অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে বলে জানান।