হবিগঞ্জ সদরে ৫৩টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে মাত্র ১৮টি প্রতিষ্ঠানের। বাকি ৩৫টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়ন না করেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। খোদ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, এমন অনেক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলো বিগত ৩-৪ বছরেও লাইসেন্স নবায়ন করেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, লাইসেন্স ছাড়াই নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অনেক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। আবার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অনেক হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব নামসর্বস্ব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার ন্যূনতম গুণগত মানও নিশ্চিত করা হয় না। তারপরও দেদার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এতে চরম হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, প্রতিনিয়ত লাইসেন্স নবায়নের জন্য তাগিদ দিচ্ছে তারা। যারা এখন পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন করেনি সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে। অন্যদিকে, ক্লিনিক মালিকরা বলছেন, তারা আবেদন করেও সময়মতো লাইসেন্স পাচ্ছেন না। বিশেষ করে পরিবেশ অধিদফতর ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ছাড়পত্র পেতে দেরি হওয়ার কারণে লাইসেন্স পেতে দেরি হয়।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস বলেন, যেসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন নেই তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তালিকায় দেখা যায়, শহরের অনেক নামিদামি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অনেকে বলছেন, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে চিকিৎসার পরিবর্তে প্রতারিত হচ্ছেন তারা। এসব অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগ কঠোর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা কমিটির সদস্য বাহার উদ্দিন বলেন, যারা বিষয়টি দেখভাল করার কথা তারা যদি নীরব থাকে তা হলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? ব্যবসার নামে মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে তামাশা করার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই নেই ডিউটি ডাক্তার কিংবা দক্ষ ল্যাব টেকনিশিয়ান। কোনোভাবে জোড়াতালি দিয়ে সাইনবোর্ড বসিয়ে চলছে তাদের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসা।
এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষ বলছে, নিয়মিত স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকি না থাকার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কারণে দুর্গম হাওড়বেষ্টিত এলাকা থেকে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে।