দীর্ঘ ৫ বছর পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। এদিন সকাল থেকেই নববর্ষের আমেজে মুখর ছিল পুরো ক্যাম্পাস। বাঙালির সংস্কৃতির অংশ হিসেবে মাছ, তরমুজ, ডাকটিকিটের বক্স, হাতপাখাসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতীক নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে এমন বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয় পয়লা বৈশাখ। এরপর করোনা মহামারি এবং মাহে রমজানের কারণে স্বল্প পরিসরে আয়োজিত হয় নববর্ষের অনুষ্ঠান। এরপর এবার বড় পরিসরে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাভবন-ই এর সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই জায়গা গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লোকজ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় সমস্যা হলো ঋণখেলাপি সংস্কৃতি। নববর্ষের সূচনা হয়েছিল ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও খাজনা আদায়ের উদ্দেশ্যে, তাই আজকের এই দিনে আমাদের উচিত নতুন প্রত্যাশা গড়ে তোলা-যাতে নতুন করে আর কেউ ঋণখেলাপি না হয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবে। তারা যেন এই বিষয়ে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে, সেটাই কাম্য। এছাড়াও, তিনি পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করছি। যারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িত, আমি আশা করি সরকার তাদের বিচার নিশ্চিত করবে। আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীরা যেন নববর্ষে শপথ নিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বড়রা ছোটদের স্নেহ করবে, আর ছোটরা বড়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। শিক্ষাজীবনে সবাই একে অন্যকে সহযোগিতা করবে, পড়ালেখা ও খেলাধুলা-উভয় ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
পরবর্তীতে বিকেল ৩টায় মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নববর্ষ উদযাপনে আলপনা উৎসব, প্রদীপ প্রজ্জলন, ফানুস উৎসব, রিকশা র্যালি, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ ও বাউল গান সহ বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ।