শুভ্র দেব। দেশের খ্যাতনামা একজন সঙ্গীতশিল্পী। প্রায় ৯ বছর আগে তিনি হারিয়েছেন নিজের বাবাকে। গেল সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি বাবার সেই স্মৃতিচারণ নিয়ে একটি লেখা পোস্ট করেন। সেই লেখাটি পাঠকদের জন্য হুবুহ তোলে ধরা হলো।
বাবাকে হারিয়েছি ২০১৬ সালে। দিনগুলো কতো তাড়াতাড়ি চলে যায় কিন্তু মনে হয় কিছুদিনের আগের কথা আমার বড় বোন নিউইয়র্ক থেকে ফোন করেছিলো যে এবার অনেক খারাপ অবস্থা মনে হয় বাবা আর সেরে উঠবেন না। এরকম আগেও দুবার হয়েছে কিন্তু বাবা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন।
যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তখন সিলেটে বাবার প্রথম heart atrack হয়, Myocardial infarction. সেই যাত্রায় বাবা অলৌকিক ভাবে বেঁচে যান। তবে ডাক্তার সুধাংশু দাদার কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ উনার ঐকান্তিক চেষ্টাতেই বাবা নতুন জীবন লাভ করেন। যেহেতু বাবা একজন স্কাউট ছিলেন এবং ফুটবল ও লন টেনিস খেলতেন তাই তিনি strong build বা সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। ছোটো বেলায় তাঁর মেডেল গুলো নিয়ে আমি খেলতাম।
বারো বছর আমার বাবা মা বড় বোনের কাছে ছিলেন তখনি তাঁর heart এর পেস মেকার লাগানো হয়। তারপর বাবা মা দুবাই, কানাডা আমেরিকার অনেক শহরেই ভ্রমণ করেছেন তাই সন্তান দের নিয়ে তিনি অনেক গর্বিত ছিলেন।আমার বোনরা বাবা -মা কে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলো। আমার চার বোন রিনি, ঝিনি, তিন্নি আন্নি। কিন্তু বাবা আমার প্রতি বেশি দুর্বল ছিলেন আমাকেই সব চাইতে ভালোবাসতেন। তাই বাবার একটা minor operation যেমন চোখের কেটারেক্ট অপারেশন হয়েছিল। আমিবাংলাদেশ থেকে আমেরিকাতে শত কাজ রেখেও চলে গিয়েছিলাম।
তিনি তাঁর ছাত্রদের নিয়ে অনেক গল্প করতেন। তাই ছাত্ররাই তাঁকে দিয়ে নিউইয়র্কের জ্বালালাবাদ অফিস উদ্বোধন করিয়েছিলো। ছাত্ররা ছিলো তাঁর প্রাণ। তাঁদের নিয়ে তিনি ছিলেন অনেক গর্বিত। অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ ছিলেন।আমার স্ত্রী টুম্পা ও আমার ছেলে শ্রেয়ান কে সবচাইতে ভালো বাসতেন। এই ছবিটি নিউ ইয়র্কে প্রথমবার শ্রেয়ান যখন গিয়েছিলো তখন আমাদের সাথে।
তোমাকে অনেক মিস করি আমরা। ভালো থাকো বাবা।