হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা থেকে নিখোঁজের ৭ দিন পর চুনারুঘাটের কাপাইছড়া চা বাগানের গহীন জঙ্গল থেকে মাটি খুঁড়ে লিটন মিয়া (৩৮) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ১১টায় চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাপাইছড়া চা বাগানের ৯ নম্বর টিলার ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। লিটন মিয়া মাধবপুর উপজেলার গোয়াছনগর এলাকার ছায়েদ আলীর ছেলে।

থানা পুলিশ ও নিহত লিটনের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল সাতছড়ি লাকড়ি সংগ্রহের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় লিটন। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।সম্ভাব্য সকল স্থানে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। দীর্ঘ ৭ দিনেও লিটন বাড়িতে ফিরে না এলে পরিবারের লোকজন বুধবার চুনারুঘাট থানাকে বিষয়টি অবগত করেন।

খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনার ক্লু উদঘাটনে মাঠে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কাপাইছড়া চা বাগানে অভিযান চালিয়ে প্রমোদ রিকমন (৩২) নামে এক ঘাতককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রমোদ কাপাইছড়া চা বাগানের মঙ্গল রিকমনের ছেলে। পরে প্রমোদকে সাথে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যমতে পাহাড়ি এলাকার কাপাইছড়া চা বাগানের ৯ নম্বর টিলার ভেতরে মাটিচাপা দিয়ে রাখা লিটন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘাতক প্রমোদ রিকমন পুলিশকে জানায়— তার ১০টি গরু চুরি হয়েছে। ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় কাপাইছড়া বাগানে লিটনকে গরু চোর সন্দেহে ৫ জন মিলে আটক করে মারপিট করে। এক পর্যায়ে মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। এরই এক পর্যায়ে লিটনের মৃত্যু হয়। পরে প্রমোদ রিকমনসহ ৫ জন মিলে নিহত লিটনের লাশ মাটিতে পুঁতে রেখে চলে যায়।

চুনারুঘাট-মাধবপুর সার্কেলের এএসপি মো: সালিমুল হক বলেন— মাধবপুর উপজেলার গোয়াছনগর এলাকার লিটন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মারপিট করে হত্যার পর মরদেহ পুঁতে রাখার ঘটনায় চুনারুঘাটের ওসি নুর আলমের নেতৃত্বে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে সাথে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যমতে কাপাইছড়া চা বাগানের ৯ নম্বর টিলায় মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন— ঘটনা জানার ১২ ঘণ্টার মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তারের পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আরও যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।