আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেঘনা আলম। মডেল থেকে আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কের মধ্যেও ঢুকে গেছেন এই নারী। অভিযোগ আছে, বিদেশি কূটনীতিক, রাষ্ট্রদূত আর প্রভাবশালীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করেন তিনি। মডেল মেঘনার সেই জালে ধরা দেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত। তারপর কেঁচো খুড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে একের পর এক সাপ।
বরিশাল থেকে এসএসসি পাশ করে রাজধানীর ভিকরুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন মেঘনা আলম। এইচএসসির পর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর পরিচিতি লাভ করেন। সেটাকে কাজে লাগিয়েই প্রভাবশালীদের পেছনে ছুটতে শুরু করেন।
সম্প্রতি ৯ এপ্রিল মেঘনা আলম আটক হওয়ার আগে, ফেসবুকে করা একটি লাইভ ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ফেসবুক লাইভের শুরুতে মেঘনাকে আতঙ্কিত চেহারায় বলতে দেখা যায়, দরজা ভাঙছে, আমার জীবন ঝুঁকিতে।
এই লাইভের পরপরই সৌদি রাষ্ট্রদূতের অনানুষ্ঠানিক অভিযোগকে কেন্দ্র করে মেঘনাকে আটক করা হয়। রিমান্ডে নিলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ এবং নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করতেন মেঘনা আলম। তবে এই কাজের আড়ালেই একটি প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন তিনি।
চক্রটি গত বছরের জানুয়ারি মাসে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলানকে টার্গেট করে। তখন থেকেই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নানা কৌশলে সখ্য তৈরি করে মেঘনা। একপর্যায়ে মেঘনা আলম ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করে ফাঁদে ফেলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন দুহাইলানের কাছে।
এই ঘটনার পর সৌদি রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানান, এক নারী তার কাছ থেকে ‘আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য’ সম্পর্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। পরে ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মেঘনাকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মেঘনা ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনের অপচেষ্টা করছিলেন। তিনি আরও কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিকের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাদের অনেকে এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনা আলমের পরিচয় হয়েছিল আট মাস আগে। সেই পরিচয়েই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সখ্য। মেঘনার পরিবারের দাবি, পরিচয়ের মাত্র চার মাস পর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে গোপনে বাগদান হয়। তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তারা।