1. admin@sylhetbela24.com : admin :
June 23, 2025, 11:15 pm
বিজ্ঞপ্তিঃ
সিলেট বেলা ২৪ ডটকম এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম! আপনার আশে পাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ আমাদেরকে জানাতে sylhetbela247@gmail.com এ পাঠিয়ে দিন। আমরা যাচাই বাছাই শেষে তা যথারীতি প্রকাশ করবো। আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

‘উইমেন চেম্বার হবে সকল নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান’

  • প্রকাশিতঃ রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫
  • 477 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

বেলা প্রতিবেদন :

সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিকে নিয়ে মুখ খোললেন নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ সিলেটে নারী উদ্যোক্তাদের বৃহৎ এই অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটিকে এবার পুরোপুরি বিএনপি করণের প্রচেষ্টা চলছে। ৫ আগষ্টের পর থেকে সুবিধাবাদী চক্রের প্রচেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এর আগে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চেম্বারের টানা ১০ বছর দায়িত্বে থাকা স্বর্ণলতা রায় অব্যাহতি নিলে বিএনপির কুদৃষ্টি পড়ে উইমেন চেম্বারে। এরই ধারাবাহিকতায় সদস্যপদ নবায়নে নব নিযুক্ত প্রশাসকের বেধে দেওয়া সময়সীমা বৃদ্ধি করে নিজেদের দলের লোকজনকে সদস্য বানাতে মরিয়া বিএনপির প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ফলে সিলেটে নারী উদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ এই অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আবারো বিতর্কের মুখে পড়বে একই সাথে সদস্যদের সুযোগ-সুবিধার বিপরীতে দলীয় সংগঠনে পরিচিতি পাবে। এই অবস্থায় গ্রহনযোগ্য ও অংশগ্রহণ মূলক একটি নির্বাচনের দাবিতে কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারী অরাজনৈতিক পক্ষের। এই পক্ষে নের্তৃত্ব দিচ্ছেন উইমেন চেম্বারের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুবানা ইয়াসমিন শম্পা। অপর অংশের নের্ত্বত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীযতাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী।

এর আগে গেল মাসের ১৩ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে সিলেট উইমেন চেম্বারের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করা হয় এবং প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি শিক্ষা) মো. নুরের জামান চৌধুরীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। একই আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘ বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭ ধারা মোতাবেক সংগঠনটির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিলপূর্বক নতুন প্রশাসক নিয়োগ করা হলো। তিনি ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।’

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুবানা ইয়াসমিন শম্পা বলেন, টানা ১০ বছর সভাপতি পদে আসীন থাকা স্বর্ণলতা রায় সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নিলে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক নিয়োগ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক নিয়োগের প্রেক্ষিতে সকল সদস্যদের মধ্যে নতুন করে উৎসাহ উদ্দিপনাসহ একটি সুষ্টু নির্বাচনের আওয়াজ জেগে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের লক্ষ্যে শুরু হয় দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসকের কর্মতৎপরতা। ২৩ মার্চ সকল সদস্যদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করেন নতুন প্রশাসক। বৈঠক থেকে সংগঠনটির সদস্য নবায়ন করার চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ১৭ এপ্রিল। কিন্তু চূড়ান্ত সময়ের শেষ মুহুর্তে কারো সাথে কথা না বলে প্রশাসক হঠাৎ করেই সদস্য নবায়নের সময়সীমা আরও ১০ দিন বৃদ্ধি করেন। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে একটি পক্ষের চাহিদা পূরণ করা হয়েছে। যা এই সময়টাতে প্রশ্নবিদ্ধ হলো। একই সাথে আসন্ন নির্বাচন সুষ্টু গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষতা হারাতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, রাজনীতি করার জন্য এই প্রতিষ্ঠান নয়, এটি নারী উদ্যোক্তাদের। এখানে সবাইকে দলীয় পরিচয়ের উর্দ্ধে উঠে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করতে হবে।

নারী উদ্দ্যোক্তা নীপা দাস বলেন, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সাথে জড়িত নিবন্ধিত নেতৃস্থানীয় বাণিজ্য সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। ২০১৫ সালে এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা হলে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্বর্ণলতা রায়। সংগঠনের লক্ষ্য হল মহিলা উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন এবং পরিচালিত ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলির জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার সমস্ত পদক্ষেপগুলিকে সুরক্ষা, বিকাশ, সমর্থন এবং প্রচার করা। কিন্তু দু:খের বিষয় বারবার এই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে বারবার। এই অবস্থার অবসান কল্পে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে চেম্বারের নতুন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা প্রশাসকের কাছে একটি সুষ্টু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করি। কিন্তু অবশ্যই নির্বাচনের আগে সবকিছুই যেন রাজনৈতিক চাপমুক্ত থাকে।

নারী উদ্যোক্তা ওয়াহিদা আখলাক বলেন, উইমেন চেম্বারকে ফের দলীয়করণের অপচেষ্টা চলছে। অথচ, এটি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এমন অপতৎপরতা সিলেটে নারী উদ্যোক্তা তৈরীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির শামিল। তাছাড়া প্রশাসক ঘোষিত ১৭ এপ্রিল নবায়ন ফরম জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সেদিন শত শত ফরম সংগ্রহ করে নেন প্রতিপক্ষ গ্রুপ। ‘ফলে আমরা মনে করছি, নবায়ন তারিখ পেছানোর নেপথ্যে একটি হীন উদ্দেশ্য রয়েছে। রয়েছে রাজনৈতিক দুরভীসন্ধি।

নারী উদ্যোক্তা সাবিলা কান্তা বলেন, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স নারী উদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান এবং নি:সন্দেহে সেটি অরাজনৈতিক। বিভিন্ন দল ও মতের নারী উদ্যোক্তারা এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হবেন। সেক্ষেত্রে সকলের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্ঠিতে অবশ্যই পরিবেশ হবে ব্যবসাবান্ধব। সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে সকল দল মতের সদস্যদের। কিন্তু সেই সংগঠনে রাজনীতি প্রবেশ করলে, সেটি দলীয় প্রতিষ্ঠান এবং দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের দিকেই ধাবিত হবে। যে প্রচেষ্টা কখনোই ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না।

নারী উদ্যোক্তা শাহানা চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন পর সিলেট উইমেন চেম্বারে একটি নির্বাচন হবে- এই সংবাদটিই সকল স্তরের সদস্যদের কাছে আশা জাগানিয়া। কারণ টানা ১০ বছরের জিম্মিদশা থেকে প্রতিষ্ঠানটি মুক্তি পেয়েছে। এখন ভোটাররা অনেক কিছু প্রত্যাশা করছে। তাদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতি আমাদের সম্মান জানাতে হবে।তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ থাকতে পারে। মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে সবার আগে চেম্বারের সকল সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং তাদের সুচিন্তিত মতামতকে সম্মান প্রদর্শন করা। না হলে ফের জিম্মিদশার কবলে পড়বে সিলেট উইমেন চেম্বার।

সিলেট চেম্বারের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদ হবে ১১ সদস্যের। দুটি ক্যাটাগরিতে এর সদস্যপদ লাভ করা গেলেও ভোটাধিকার রয়েছে অর্ডিনারী সদস্যদের। তবে এসোসিয়েট সদস্যরা চেম্বারের সমুদয় সুযোগ-সূবিধা ভোগ করতে পারবেন। উইমেন চেম্বারের সদস্য সংখ্যা তালিকায় চলতি মাসের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নবায়ন করে লিখিতভাবে ৮৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। তবে ১৭ এপ্রিলে নবায়নকৃত সদস্যসংখ্যা যোগ করা হলে এই সংখ্যা দুই শতাধিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন সদস্যরা।
উইমেন চেম্বারের প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি শিক্ষা) মো. নুরের জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব প্রাপ্তির পর চেম্বারের সকল স্তরের সদস্যদের নিয়ে মিটিং করি এবং সকলের সম্মতিক্রমে এটি সুষ্টু নির্বাচনের জন্য ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সদস্য নবায়নের তারিখ ধার্য্য করি। পরবর্তিতে এই সময় আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২৭ মার্চ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করে সদস্যদের পক্ষ থেকে একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। তাদের যৌক্তিক বিষয়টি মাথায় রেখেই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এখানে কোনো পক্ষ নেই। তাছাড়া এখনও নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করা হয় নি। অংশগ্রহণ মূলক একটি নির্বাচনের জন্য সর্ব্বোচ্চ স্ংখ্যক নারী উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়াই হবে আমার মূল লক্ষ্য।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2024 Sylhetbela24.com
Theme Customized By BreakingNews