বেলা প্রতিবেদন :
একজন ক্ষমতার প্রভাবে সিলেটে খ্যাত ‘সেকেণ্ড লেডি’ নামে। অপরজন ধুর্ত প্রতারক ও ভূমি খেকো। দুজনই আবার ব্যবসায়ীক পার্টনার। কেউ কেউ তাদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবেও উল্লেখ করে থাকেন। আলোচিত এই দুজন হলেন, এইচএম করপোরেশেনের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেলেন আহমদ। অপরজন হেলেনের ব্যবসায়ীক পার্টনার কয়েস আহমদ। পুরো নাম মিসবাহুল ইসলাম কয়েস। গেল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হেলেন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার অধিকারী। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের স্নেহধন্য হয়ে তিনি ভিটে-মাটি, টিলা ভূমি দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর স্ত্রী সেলিনা মোমেনের ঘনিষ্টজন হিসেবেও হেলেন আহমদ বিগত সময়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন।
এখন পাল্টে গেছে সেই দৃশ্যপট। ৫ আগষ্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থানে। সুযোগ বোঝে হেলেনও পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। তবে রাজনৈতিক খোলস পাল্টিয়ে প্রকাশ্যে ছিলেন, হেলেনের সকল অপকর্মের বিশ্বস্থ সহযোগী আইনজীবী মিসবাহুল ইসলাম কয়েছ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। ১২ এপ্রিল জিন্দাবাজার থেকে একাধিক মামলার আসামী এই কয়েসকে গ্রেপ্তার করে সিলেট কোতয়ালি থানা পুলিশ।
এদিকে কয়েস গ্রেপ্তারের পর তাদের উপর ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দীর্ঘ হচ্ছে। ক্ষমতার প্রভাবে নগরীর জিন্দাবাজার জল্লারপাড় রোডে ড্রেনের উপর তিনি স্থাপনা নির্মাণ করেন। কিন্তু অবৈধ এই কর্মকাণ্ডে কারো প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না। প্রশাসনকে ব্যবহার করে অবৈধভাবে ড্রেনের উপর পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে নির্মাণ করেছেন এইচএম কর্পোরেশনে নামের প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ড্রেনের উপর নির্মাণকৃত প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ অবস্থায় পরিদর্শনে যান মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর।
এসময় বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, হেলেন-কয়েস ক্ষমতা ব্যবহার করে সিলেটের বিভিন্নস্থানে ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে। আমাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় আমরা চরম ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ দিলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এসময় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা জানান, সিসিকে আমরা অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাই নাই। তারা ক্ষমতা ব্যবহার করে জোরপূর্বক ড্রেনের উপর প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মিতালী ম্যানশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অলিউর রহমান, সহ-সভাপতি মিছবাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক, লন্ডন ম্যানশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গুলজার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, ব্যবসায়ী রুহুল আবেদীন, জয়নাল আবেদীন, মহিবুর রহমান, শাহাদত হোসেন, আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।