ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর বদলার আগুনে ফুঁসছে নয়াদিল্লি। ধাপে ধাপে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে ভারত। অন্যদিকে যুদ্ধের আশঙ্কায় পাল্টা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ইসলামাবাদ। সীমান্তের ঘাঁটিগুলিতে বাড়ানো হচ্ছে সেনা সংখ্যা। করাচি থেকে উড়ছে যুদ্ধবিমান, গন্তব্য লাহোর-রাওয়ালপিন্ডি। যুদ্ধ যেন শুধু সময়ের অপেক্ষা!
মঙ্গলবারের হামলায় নিহত ২৬ জনের রক্ত শুকায়নি এখনও। তার মধ্যেই বন্ধ হয়েছে ভিসা, আকাশসীমা। সীমান্তে কাঁপন। যুদ্ধ কি কেবল উত্তাপেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি লেগেই গেল ভয়াল সংঘর্ষ? কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় নয়াদিল্লি সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করছে। বলছে, এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। অন্যদিকে, ইসলামাবাদ পাল্টা দাবি করছে, এটি একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বা ভারতের সাজানো নাটক।
এই হামলা শুধু এক দেশ নয়, পুরো অঞ্চলের ভবিষ্যৎকেই নিয়ে গেছে অন্ধকার গহ্বরে। দিল্লি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বন্ধ করে দেয় পাকিস্তানিদের ভিসা। আর ইসলামাবাদ বন্ধ করে দেয় ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশপথ। ফ্লাইট ট্র্যাকার দেখাচ্ছে, করাচি থেকে একের পর এক সামরিক উড়োজাহাজ উড়ে যাচ্ছে লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডি ঘাঁটির দিকে। যুদ্ধ প্রস্তুতির স্পষ্ট ছবি ছড়িয়ে পড়েছে এক্সে।
পাকিস্তানে যে কোনো সময় হামলা করতে পারে ভারত। এমন আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে পাকিস্তানকে। ফলে হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী। ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান হুমকির ফলে এ বিশ্বাস দৃঢ় হচ্ছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন কথা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন পাকিস্তানের এক সামরিক কর্মকর্তা।
দুই দেশের সীমান্তজুড়ে গর্জে উঠছে কামান, থমকে গেছে জনজীবন। রাজনৈতিক ভাষা এখন যুদ্ধঘোষণার মতোই সরাসরি। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলছেন, এই হামলার জবাব হবে আগুনে আগুনে। আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, যুদ্ধ চাপালে জবাব হবে ভয়ংকর। এই মুহূর্তে দিল্লি ও ইসলামাবাদের কথোপকথন আর কূটনৈতিক নয়, এটি সরাসরি যুদ্ধের ভাষায়।
তিন-তিনবার যুদ্ধ করা এই দুই দেশের মধ্যে এবারের উত্তেজনা আরও ভয়ানক। পারমাণবিক অস্ত্রের ছায়া, আন্তর্জাতিক চাপ ও ভঙ্গুর রাজনীতি পরিস্থিতিকে করেছে বিস্ফোরণপ্রবণ। এই উত্তেজনার মধ্যেই, বৃহস্পতিবার উধমপুরে নতুন সংঘর্ষে প্রাণ গেছে এক ভারতীয় সেনার।