সুনামগঞ্জ জেলার ১২ কিলোমিটার সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা ও অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা করেছে বিজিবি’র ২৮ ব্যাটেলিয়ান। সীমান্তবতীর্ এলাকার জনগণকে জানানো হচ্ছে, ওখানে (ভারতে) শুক্রবার রাত আটটা হতে সকাল আটটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করায় এপারে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ বিজিবি’র দায়িত্বশীলরা জানান, সিলেটের ৪৮ বিজিবির সীমানা শুরু হয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকা থেকে। এই উপজেলার বাঁশতলা, পেকপাড়া—বাগানবাড়ীতে থাকা বিজিবি ক্যাম্পের ঠিক উল্টোদিকে ভারতীয় কতৃর্পক্ষ রাত আটটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারী করেছে, এটি কবে নাগাদ শিথিল হবে এটিও বলা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশী নাগরিক যারা অবৈধপথে এপারে যায় তাদেরকে শনিবার সভা করে, জনে জনে আলোচনা করে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে ওখানে গেলেই বিপদে পড়বেন তারা।
প্রসঙ্গত, এই সীমান্ত পথের কোন কোন এলাকায় কাঁটাতারের বেড়াও নেই। ওই পথ দিয়ে এই সময়ে আসছে গরু, পেঁয়াজ, চিনি, বিভিন্ন ধরণের ভারতীয় মসলা, চকলেটসহ নানা প্রসাধন পণ্য, মাদকসহ ভারতীয় মালামাল। এপার থেকে ওপারে (ভারতে) যাচ্ছে ইলিস মাছ, শিং মাছ, সুপারীসহ নানা দেশীয় পণ্য। অনেক চেষ্টা করেও বিজিবি এই চোরাচালান ঠেকাতে পারছে না।
বিজিবি’র ওই কর্মকর্তা জানান, বিএসএফ এর দুই নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সীমান্ত এলাকায় কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে। দুই নম্বর বিএসএফ ব্যাটেলিয়ান এলাকায় সিলেটের ৪৮ ব্যাটেলিয়নের সঙ্গে সুনামগঞ্জের ৯০ কিলোমিটার সীমান্তের ১২ কিলোমিটার পড়েছে। অন্য ৭৮ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান থাকলেও, ওদিকেও সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজিবিকে।
বিজিবির দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুশইন হচ্ছে, এটিও রোধ করার নির্দেশনা আছে বিজিবি’র। যেমন মায়ানমারের অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে ভারতে যাচ্ছে বা ঢুকে গেছে তাদের পুশইন, আবার বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে তাদের পুশইন এবং মায়ানমার থেকে ভারতে গেছে তাদেরকেও বাংলাদেশে পুশইন করার ঘটনা ঠেকাতে বিজিবিকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক জাকারিয়া কাদির বললেন, বিজিবি’র চোখ এড়িয়ে অনেক সময় ভারতে চলে যায় সীমান্তের লোকজন। এরা যাতে ওপারে গিয়ে কারফিউয়ের মধ্যে পড়ে মহাবিপদে না পড়ে সেজন্য দোয়ারাবাজারের ১২ কিলোমিটার সীমান্তে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা, সচেতনতা কার্যক্রম ও অতিরিক্ত টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানালেন, কারফিউ কতদিন চলবে তাও বলা যাচ্ছে না। জেলার অন্য সীমান্ত এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা থাকলেও সতর্ক থাকার নির্দেশ আছে।