বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত ইংল্যান্ডের পেশাদার ফুটবলার হামজা চৌধুরীর প্রতিবেশি শমিত সোম। তিনিও কানাডিয়ান ফুটবলার। দুজনেরই বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটে। সে হিসেবে হামজা চৌধুরী এবং শমিত সোম দুজনেই প্রতিবেশি। দুইজনের বাড়ির দুরত্ব ৪০ মিনিট। হামজা চৌধুরীর বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবল, আর শমিত সোমের বাড়ি মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গলের দক্ষিন উত্তর সুর গ্রামে। দুটি উপজেলার অবস্থান পাশাপশি।
হামজা চৌধুরীর পর এবার দেশে আসছেন কানাডিয়ান ফুটবলার শমিত শোম। আগামী ৩ জুন তিনি বাংলাদেশে আসছেন। দেশে এসে একরাত থাকবেন গ্রামের বাড়িতে। তার এই আগমণে আনন্দের বান বইছে নিজ উপজেলার শ্রীমঙ্গলে। ইতোমধ্যে নিজ গ্রামকে সাজানোর পাশাপাশি সোমিত সোমকে বরণ করে নিতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচী। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে শ্রীমঙ্গলের সোমবাড়ির মধ্যে।
শমিত শোমের কাকা মুক্তিযোদ্ধা মোহন লাল সোম জানালেন, ‘শমিত ও তার বাবা মানস শোম এবং মা নন্দিনা শোমের সাথে আলাপ হয়েছে। শমিত শোম একাই বাংলাদেশে আসছে। সে (শমিত) খুবই আগ্রহী কখন বাংলাদেশে আসবে। আমি এদেশ স্বাধীনে প্রতিনিত্ব করেছি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে, আর আমার ভাতিজা জাতীয় জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিত্ব করবে, এরচেয়ে আর কিছু গর্বের হতে পারে না। সেই আনন্দে এই বৃদ্ধ বয়সেও খেলা দেখতে তাঁর সাথে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঢাকায় যাবো। তিনি আরও বলেন আগে শমিত আসলে নীরবে কাটিয়ে যেতো ছুটি, এবার সরব হয়ে উঠেছে আমার শোম বাড়ি। প্রতিদিন লোকজন দল বেঁধে এসে খবর নিচ্ছেন কোন দিন শমিত আসবে। বাজারে গেলে সবাই জিজ্ঞেস করছেন দাদা শমিতের খবর কি…!!! খুবই ভালো লাগছে। আমাদের পরিবারের সবাই আনন্দের সাথে অপেক্ষা করছি তার জন্য।
তিনি আরও জানান, ২০২২ সাথে এসে দেশে এসে শমিত ১৫ দিন ছিল। তবে আগের আসা আর এখনকার আসার মধ্যে অনেক ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছে। এখন শমিত শুধু আমার পরিবারের নয়, গোটা দেশের মানুষের। তাই এবার হয়তো বেশি দিন থাকতে পারবে না।
শমিতের পিসি ( ফুফু) পদ্মা শোম বলেন, শমিতরা এক ভাই এক বোন। শমিত একজন ইঞ্জিনিয়ার আর বোন ইস্পিতা শোম একজন ডাক্তার। তবে শমিত খুবই সাধারণ জীবন যাপন করে, দেখলে কখনও মনে হবে না সে একজন জাতীয় দলের কানাডিয়ান ফুটবলার । সে মাছে ভাতে বাঙালি মতো চলা। কানাডায় তার খেলা দেখেছি এবার ঢাকায় যাবো। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমার বাবার ফুটবল খেলাকে পেয়েছে। আমার বাবা মানিক শোম ছিলেন সিলেটের সেরা খেলোয়াড় এবং একজন শিক্ষক। তাকে যখন কানাডার ফুটবল ফেডারেশন জিজ্ঞেস করে তুই খেলা শিখলে কোথায় তখন বলেছে ছোট কালে দাদার কাছে শিখেছি।
শমিত শোমের জেটিমা শুক্লা শোম বলেন, শমিতের খাবারে তালিকায় প্রতিবারের মতো এবারও দেশি মুরগি থাকবে এটা খুবই প্রিয়। এছাড়া ডাল ভাত ও দেশি পিঠা করবেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেল আসছে এটা আমার খুবই ভালো লাগছে। আমাদের শোম পরিবারের সবাই তার সাথে ঢাকায় যাবো। এভাবে তার পরিবারের সবাই খুবই আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ করেন।
শমিত শোমের চাচাতো ভাই সৌরভ প্রসাদ শোম বলেন, ভাইয়াকে বরণে আমাদের এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আমরা প্রতিদিন ভাইয়াকে বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার আপডেট দেই।