মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঈদুল আজহার তিন দিনে পর্যটকের ঢল নেমেছে। ৭ জুন থেকে ৯ জুন উদ্যানে ঢুকেছেন ২ হাজার ৫২৮ জন দর্শনার্থী। এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৭ টাকা।
তবে এই রাজস্বের অঙ্কের আড়ালে বনের বাস্তুতন্ত্র ও বন্যপ্রাণীর জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লাউয়াছড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক, বানর, হনুমানের বাসস্থান—সবকিছুই এখন মানুষের ভিড়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়দের মতে, প্রতিটি ছুটির মৌসুমেই অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ বনের স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে মানুষের চিৎকার, যানবাহনের হর্ন, বনের ভেতরে অনিয়ন্ত্রিত ভ্রমণ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্যপ্রাণীদের আতঙ্কিত করছে এবং প্রজনন ও খাদ্যচক্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাজু মারচিয়াং বলেন, ঈদের ছুটিতে পুরো উদ্যানটাই পর্যটকের দখলে চলে যায়। এভাবে চলতে থাকলে উল্লুক, বানর, হনুমানসহ অন্য বন্যপ্রাণী হয়তো আর এই বনে টিকে থাকবে না।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণার পর পর্যটন সুবিধার নামে রেস্টহাউস, ইকো-কটেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেড়ে ওঠেছে। এর ফলে বনজীবী প্রাণীদের জন্য বনের নিরাপদ আশ্রয় ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক জানিয়েছেন, ঈদের সময় পর্যটকের চাপ বেশি থাকে। গাইডদের নির্দেশনা দেওয়া আছে পর্যটকদের আচরণ মনিটরিং করার জন্য।
তবে পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, এই ‘মনিটরিং’ কার্যত এক প্রহসনে পরিণত হয়েছে। বনবিভাগ পর্যটন সুবিধা বাড়াতে গিয়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষার দায়িত্ব ভুলতে বসেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।