ভারতের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিলের নেতৃত্বে ২০২৫-২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে ভারত। প্রতিপক্ষ বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টটি হবে ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
প্রায় এক শতাব্দী ধরে টেস্ট ক্রিকেটের সাক্ষী এই মাঠে বহু ঐতিহাসিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০১৯ অ্যাশেজে বেন স্টোকসের অবিস্মরণীয় ইনিংস—শেষ উইকেটে অপরাজিত ১৩৫ রান করে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার স্মৃতি এখানকারই।
তবে ভারতের সঙ্গে হেডিংলির সম্পর্ক ততটা নিয়মিত নয়। ২০০৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে অনুষ্ঠিত পাঁচটি ইংল্যান্ড সফরে ভারত সেখানে মাত্র একবারই খেলেছে, ২০২১ সালে, যেখানে জো রুটের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দল ভারতকে প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে অলআউট করে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছিল। এটি ইংল্যান্ডে ভারতের সর্বনিম্ন ইনিংস স্কোর।
তবু হেডিংলিতে ভারতের স্মৃতি সবসময় তিক্ত নয়। ২০০২ সালে এই মাঠেই ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ এক ঐতিহাসিক ইনিংস উপহার দেয়। নটিংহ্যামে দ্বিতীয় টেস্ট ড্র হওয়ার পর সিরিজে পিছিয়ে থাকা ভারত তৃতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়ায় দুর্দান্তভাবে।
ভারত ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হারায় বীরেন্দর শেবাগকে।
কিন্তু রাহুল দ্রাবিড় এবং সঞ্জয় বাঙ্গার গড়ে তোলেন দুর্দান্ত জুটি। দ্রাবিড় করেন ১৪৮ রানের এক ঐতিহাসিক ইনিংস। এরপর শচিন টেন্ডুলকার খেলেন ৩৩০ বলে ১৯৩ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস (ইংল্যান্ডে তার সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর)। অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিও পিছিয়ে ছিলেন না। মাত্র ১৬৭ বলে করেন ১২৮ রান।
এটাই টেস্ট ইতিহাসে একমাত্র ইনিংস যেখানে এই তিনজন একসাথে শতক করেছেন।
ভারত ম্যাচটি জেতে ইনিংস ও ৪৬ রানে। এর ফলে সিরিজটি শেষ হয় ১-১ ব্যবধানে। হেডিংলিতে এটি ছিল ভারতের দ্বিতীয় জয়, প্রথমটি এসেছিল ১৯৮৬ সালে।
হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারত ও ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত মোট ৭টি টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ইংল্যান্ড জয় পেয়েছে ৪টি ম্যাচে, যেখানে ভারত জয় তুলে নিতে পেরেছে ২টি টেস্টে। বাকি একটি ম্যাচ ড্র।
১৮৯৯ সালে প্রথম টেস্ট আয়োজিত হেডিংলি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এই পর্যন্ত ৮০টি টেস্টে অংশ নিয়েছে ইংল্যান্ড। তার মধ্যে জয় এসেছে ৩৭টিতে, হার ২৭টিতে এবং ড্র হয়েছে ১৮টি ম্যাচ। বর্তমানে তারা এই মাঠে পাঁচ টেস্ট জয়ের টানা ধারায় রয়েছে, যা তাদের ১৯৫৬-৬২ সালের টানা ৬ ম্যাচ জয়ের পর দ্বিতীয় সেরা রেকর্ড।