পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে প্রবল বর্ষণের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন আরো ২৯০ জনের বেশি।
পাকিস্তানের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনেকের ঘরবাড়ি ধসে পড়ায়, কেউ কেউ পানিতে ডুবে কিংবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
রাজধানী ইসলামাবাদের কাছাকাছি রাওয়ালপিন্ডি নগরীর প্রশাসন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। শহরটির আশপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাশের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষা মৌসুমে এবার পাকিস্তানে প্রায় ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই শিশু।
বৃষ্টির তীব্রতায় পাঞ্জাবের কয়েকটি এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ হয়ে গেছে এবং বেশ কিছু ফ্লাইট বিলম্বিত কিংবা বাতিল হয়েছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ এক্সে দেওয়া বার্তায় জানান, দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকারের সব বিভাগ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জনগণকে নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী দিনগুলোতেও ভারি বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য হাজার হাজার উদ্ধারকর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি পাকিস্তান। প্রায় ২৫ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে মূলত দুটি মৌসুমি ধারা রয়েছে— একটি চরম খরা ও তাপপ্রবাহ, অন্যটি অতিবর্ষণ।
এ ছাড়া দেশটিতে রয়েছে ১৩ হাজারেরও বেশি হিমবাহ, যেগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে দ্রুত গলছে।
২০২২ সালে মৌসুমি বৃষ্টিতে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে ডুবে গিয়েছিল। ওই সময় ১ হাজার ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয় এবং ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০২৩ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব পাকিস্তানকে ‘জলবায়ু দুর্যোগের প্রধান শিকার’ বলে উল্লেখ করে দেশটির জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানান।