অন্তর্বর্তী সরকারের যাওয়ার সময় এসেছে—এমন মন্তব্য করেছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এই সরকার কী পদ্ধতিতে যাবে, সেটাও এখন পরিষ্কার করা জরুরি।’
একইসঙ্গে তিনি ও অন্যান্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকেও এ সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সংকট নিরসনে দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানান তারা।
বুধবার (৩০ জুলাই) গবেষণায় আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আরও বলেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রমও কার্যত সময়ক্ষেপণ ছাড়া কিছু নয়।
বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন, সংস্কার নাকি বিচার—এই তিনটি বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে? জামায়াত ও এনসিপি সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির দাবি করছে; অপরদিকে বিএনপি প্রচলিত সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহ আল মামুন ২৬টি দেশে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকাল, সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। গবেষণায় দেখা যায়, ২৬টি দেশের মধ্যে ১৬টি দেশই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করেছে। এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং দ্রুত সংস্কার কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে।
গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল—বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি (পিআর) কতটা বাস্তবসম্মত। এ নিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখনো এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নয়। যারা এই পদ্ধতির দাবি তুলছেন, তারা মূলত দলের স্বার্থে কথা বলছেন, দেশের স্বার্থে নয়। অনেকেই মনে করেন, সরকারকে সময় বাড়ানোর সুযোগ দিতেই এই দাবির পেছনে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনীতি, আইন-শৃঙ্খলা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি দিন দিন ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে।
তাই দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই এ সংকটের সমাধান হওয়া উচিত।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় শেষ। তাদের যাওয়ার সময় এসেছে।’ বক্তারা সতর্ক করে বলেন, এই সরকার যত দিন থাকবে, সংকট ততই গভীর হবে।