বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় হবিগঞ্জ। জেলাজুড়ে দুই দিনেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। ফলে বিদ্যুৎবিহীন রাতকে পুঁজি করে জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার (১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের অদূরে সুরমা চা-বাগান নামক স্থানে গাছ ফেলে ডাকাতি করে একদল দুর্বৃত্ত।
যাত্রীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাস্তায় গাছ ফেলে চুনারুঘাট বালুমহালের দুটি মাধবপুরমুখী ট্রাক আটকায় ডাকাতদল। ট্রাকে থাকা লোকদের মালামাল ছিনিয়ে নেয় তারা। এ সময় সড়কের দুই দিক থেকে আসা ৮টি গাড়ি আটকা পড়ে। ডাকাতরা কয়েকজন আরোহীকে মারধরও করে।
পরে তাদের চুনারুঘাট সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে টহলে থাকা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদলটি পালিয়ে যায়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদ উল্যা জানান, খবর পেয়ে মাধবপুর, চুনারুঘাট থানা ও তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নূর আলম বলেন, তৎক্ষণাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ায় কোনো ক্ষতি করতে পারেনি ডাকাতেরা। সড়কে নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাত ১১টার পর থেকে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধ অমান্য করে ড্রাইভাররা ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় চলাচল করছেন। ফলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আইন-শৃঙ্খলা বজয় রাখতে আমরা কাজ করছি।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে টানা বৃষ্টির মধ্যে শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিকট শব্দে সিটি বাল্ব ব্লাস্ট হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়। আরেকটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৯টি উপজেলায় বিদ্যুৎ দুই দিনেও স্বাভাবিক হয়নি। ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের ক্রাইসিস হচ্ছে এবং বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান।
জানা গেছে, চুরি-ডাকাতির কবল থেকে বাঁচতে জেলার বানিয়াচং, শায়েস্তাগঞ্জ ও মাধবপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা রাতজেগে এলাকা পাহারা দিচ্ছেন।