অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে টুর্নামেন্টে স্বাগতিক লাওসের বিপক্ষে জয় দিয়ে নিজেদের অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সাগরিকার জোড়া গোলের সুবাদে তারা ৩-১ ব্যবধানে লাওসকে হারায়। আজ বুধবার (৬ আগস্ট) ভিয়েনতিয়েনের নিও লাওস স্টেডিয়ামে সাগরিকার গোলে এগিয়ে থেকে ড্রেসিংরুমে যায় পিটার বাটলারের দল।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের বিপক্ষে শুরু থেকে আগ্রাসী ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশের সাগরিকা জোড়া ও মুনকি একটি গোল করেন। ম্যাচের প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে প্রথম গোল করেন সাগরিকা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে বক্সের মধ্যে লাফিয়ে তিনি হেড করেন। লাওস গোলরক্ষক তা ঠেকাতে পারেননি। সাগরিকার সেই গোলে লিড নিয়ে প্রথমার্ধে ড্রেসিং রুমে ফেরে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক লাওস সমতা আনার চেষ্টা করে। উল্টো মুনকি আক্তারের গোলে ৫৯ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে তারা। দ্রুতগতির আক্রমণে মুনকি বক্সের মধ্যে দারুণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে ফিনিশিং করেন। এক ডিফেন্ডারকে কাটানোর পর লাওস গোলরক্ষক এগিয়ে আসেন সামনে। এরপর গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে সাইড পোস্টের পাশ দিয়ে বল জালে পাঠান মুনকি।
বাংলাদেশ দুই অর্ধেই দুটি গোল বঞ্চিত হয় ক্রসবারের জন্য। সাগরিকা গোল করার মিনিট তিনেক পর বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত। শিখার দূরপাল্লার শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। দ্বিতীয়ার্ধে মুনকির গোলের পর আরেকটি আক্রমণে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডের হেড ক্রসবারে লাগলে আবারও গোল মিস হয়।
ম্যাচের ৮৫ মিনিটে স্বাগতিক লাওস গোল করে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশের গোলরক্ষক স্বর্ণা রাণী মন্ডল পোস্ট থেকে এগিয়ে ছিলেন। তাই লাওস ফরোয়ার্ডের ফিনিশিং সেভ করতে পারেননি। ম্যাচের বাকি সময় লাওস সমতা আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। চার মিনিটের ইনজুরি সময়ে সংঘবদ্ধ এক আক্রমণে সাগরিকা বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং করে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশ অ-২০ নারী দল সম্প্রতি সাফ অ-২০ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালেও সাগরিকা একাই চার গোল করেছিলেন। সেই সাগরিকা দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে গোল করে চলছেন এশিয়ার বড় মঞ্চেও।
স্বাগতিক হলেও লাওস বাংলাদেশের বিপক্ষে তেমন দাপুটে ফুটবল খেলতে পারেনি। কাউন্টার অ্যাটাক কিংবা বাংলাদেশের ভুল পাসে বল পেয়ে কয়েকটি আক্রমণ করেছে। এএফসি অ-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপে অন্য দুই দল শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া ও অপেক্ষাকৃত দুর্বল তিমুরলেস্তে। দক্ষিণ কোরিয়া এই গ্রুপের হট ফেভারিট। বাংলাদেশের লক্ষ্য গ্রুপের রানার্সআপ নিশ্চিত করে বাকি আট গ্রুপের মধ্যে সেরা তিন রানার্সআপ হয়ে চূড়ান্ত পর্ব খেলা। ফলে স্বাগতিক লাওসের বিপক্ষে জয় খুবই প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের গ্রুপে লাওস ছাড়াও আছে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া। লাওসের সিনিয়র দলের ফিফা র্যাঙ্কিং ১০৭, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৯ আর বাংলাদেশের ১২৮। লাওস বাংলাদেশের চেয়ে ২১ ধাপ এগিয়ে। শুক্রবার গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর লেস্তের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।