সিলেট নগরের সোবহানীঘাটস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ভাঙচুর, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কয়েকজন আহত হন।
জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর সিলেট বিমানবন্দর সড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলসাইন্দ মোকামটিলার যুবক তানিম আহমেদ। প্রথমে তাকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১২ দিন আগে ইবনে সিনার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তানিমের স্বজনদের অভিযোগ—চিকিৎসকদের অবহেলা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তারা হাসপাতালে ভাঙচুর ও স্টাফদের ওপর হামলার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে হাসপাতালের কর্মচারীরাও সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে রোগীর স্বজনদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। সংঘর্ষে নিহতের কয়েক স্বজন আহত হন। তাদের ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে মহানগরের সোবহানীঘাটস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালের শাখা রণক্ষেত্র হয়ে উঠে। এসময় হাসপাতালটির স্টাফরা নিহতের স্বজনদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালান এবং বেধড়ক মারধর করেন।
তবে এর আগে নিহতের স্বজনরা হাসপাতালের নার্স ও স্টাফদের উপর হামলা এবং হাসপাতালটিতে ভাঙচুরের চেষ্টা চালান।
খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। বর্তমানে ইবনে সিনায় পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।
স্টাফদের মারধরে ৫ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর সিলেট এয়ারপোর্ট সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গোলাপগঞ্জের তানিম এক নামের এক যুবক। তাকে প্রথমে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ১২ দিন আগে সেখান থেকে তাকে সিলেট মহানগরের সোবহানীঘাটস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করেন স্বজনরা। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালে তিনি মারা যান।
এদিকে, তানিমের স্বজনদের অভিযোগ- ডাক্তারের অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা-ব্যবস্থা নিয়েও কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ইবনে সিনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তানিমের স্বজনরা ইবনে সিনা হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের উপর হামলার চেষ্টা করেন। ভাঙচুরেরও চেষ্টা করেন সেখানে। পরে হাসপাতালটির স্টাফরা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে নিহতের স্বজনদের উপর চড়াও হন এবং হামলা চালিয়ে তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। এরপর তারা রাস্তায় এসেও নিহতের স্বজনদের লাঠিসোটা দিয়ে মারপিট করে। এতে নিহতের ৫ স্বজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাত সোয়া ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাত ১১টার দিকে কওমি কণ্ঠকে জানান- তানিমের লাশ এখনো ইবনে সিনায় রয়েছে। মারামরারিত আহত ৫ জনকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।