আবুধাবির গরম আবহাওয়া, গ্যালারিতে উত্তেজিত দর্শক আর মাঠে দুলতে থাকা ম্যাচের ভাগ্য সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান লড়াই যেন একেবারে থ্রিলারে ভরপুর। শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
এই জয়ে শুধু জয়ই নয়, বাঁচা-মরার সমীকরণে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখল টাইগাররা।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরম্যান্স
পাওয়ার প্লে (প্রথম ৬ ওভার):
ওপেনিং জুটিতে সাইফ হাসান ও তানজিদ তামিম সতর্কভাবে শুরু করলেও দ্রুত রান তুলতে হিমশিম খেতে হয়। পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৮/১।
ওপেনারদের অবদান: সাইফ হাসান ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়ে ফেরেন ২৮ বলে ৩০ রানে। তবে অপরপ্রান্তে তানজিদ তামিম খেলেন দারুণ ফিফটি (২৮ বলে ৫২ রান), যা বাংলাদেশের স্কোরকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে বড় ভূমিকা রাখে।
মধ্য ওভার:
লিটন দাস নামলেও টিকতে পারেননি, ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর শামীম পাটোয়ারী (১১) ও তাওহীদ হৃদয় (২৬) কিছুটা অবদান রাখেন।
শেষ ওভারগুলোর সংগ্রাম: জাকের আলি (১৩ বলে ১২) ও নুরুল হাসান সোহান (৬ বলে ১২) শেষ দিকে ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংস খেলেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৪/৫।
আফগানিস্তানের ইনিংস: দারুণ শুরু, তবু হার
১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান প্রথম বলেই আঘাত পায়।
প্রথম আঘাত: বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ প্রথম বলেই সেদিকউল্লাহ অটলকে এলবিডব্লিউ করেন। এর পরপরই ইব্রাহিম জাদরানও আউট হয়ে যান।
পাওয়ার প্লে (প্রথম ৬ ওভার): মাত্র ২৭ রান তুলতে পারে আফগানরা। ব্যাটিং চাপে পড়ে যায় দলটি।
মধ্য ওভার: রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আফগানরা ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরতে থাকলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে।
শেষ ওভারগুলোর নাটকীয়তা: রশিদ খান ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ রান করে আশা জাগালেও মুস্তাফিজুর রহমান শেষের ওভারে জোড়া আঘাত করে ম্যাচকে বাংলাদেশের দিকে টেনে আনেন। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ১৪৬ রানে।
বাংলাদেশের বোলিং পরিসংখ্যান
মুস্তাফিজুর রহমান – ৩ উইকেট
নাসুম আহমেদ – ২ উইকেট
রিশাদ হোসেন – ২ উইকেট
তাসকিন আহমেদ – ২ উইকেট
শুরুতে নাসুম ও মাঝের ওভারে রিশাদ আফগান ব্যাটিং লাইনআপকে ভাঙতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শেষ দিকে মুস্তাফিজ দুর্দান্ত বোলিং করে জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট
১. নাসুম আহমেদের প্রথম ওভারে উইকেট তুলে নেওয়া।
২. তানজিদ তামিমের দ্রুত ফিফটি।
৩. শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাত।
ম্যাচ সেরা
তানজিদ তামিম – ৫২ রান করে দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোর এনে দেওয়ার জন্য।
বিদেশের মাটিতে ঐতিহাসিক জয়
টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ সময়ে জয় পাওয়া ছিল কঠিন কাজ। তবে এবার বিদেশের মাটিতে প্রথমবার আফগানিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ। সুপার ফোরে টিকে থাকার লড়াইয়ে এই জয় শুধু মানসিক শক্তিই নয়, আত্মবিশ্বাসও ফিরিয়ে দিল টাইগারদের শিবিরে।